পুলিশের চোখে নির্দোষ পিবিআই তদন্তে অপরাধী শিক্ষিকা নাহিদ আক্তার শবনম ও তার পরিবার


প্রকাশের সময় : এপ্রিল ২৬, ২০২৪, ৬:১৯ অপরাহ্ন / ৬৯
পুলিশের চোখে নির্দোষ পিবিআই তদন্তে অপরাধী শিক্ষিকা নাহিদ আক্তার শবনম ও তার পরিবার

মোঃ নেওয়াজ মোর্শেদ নোমান, জয়পুরহাটঃ স্বামী-শাশুড়ির ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে যৌতুক পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইনে মামলা করেন নাহিদ আক্তার শবনম নামে এক স্কুল শিক্ষিকা। স্বামী-শাশুড়ির বিরুদ্ধে এ মামলা করে চরম বিপাকে পড়েছেন তিনি নিজেই।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষিকা জয়পুরহাট ক্ষেতলাল উপজেলার বাসিন্দা ঐ শিক্ষিকার দায়েরকৃত মামলাটি ভিন্নখাতে নিতে শাশুড়ি ছুফিয়া বেগম উল্টো তাকে ফৌজদারী ও মারধরের মামলা ফাঁসিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই মামলায় পরিকল্পিতভাবে তার পিতা-মাতা বোনসহ পক্ষীয়দের আসামি করা হয়েছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নাসিরুল মামলাটি তদন্ত করছেন। যে কোন উপায়ে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন পক্ষে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে পুলিশ তদন্ত সংস্থা পিবিআইয়ের পরিদর্শক নাসিরুলের বিরুদ্ধে। এদিকে পিতার বাড়িতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন নাহিদ আক্তার শবনম। গত ১২ মার্চ পক্ষপাতিত্ব মূলক মিথ্যা ও বানোয়াট প্রতিবেদন দাখিলের অভিযোগ এনে তিনি পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই) ঢাকা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

স্কুল শিক্ষিকা নাহিদ আক্তার শবনম তার লিখিত অভিযোগে বলেন, আমার শাশুড়ি সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে আমি সহ আমার বাবা-মা বোন এবং আমার পরিবারের বাহিরে আরো দুজনকে অভিযুক্ত করে ২০২২ সালের ১২ই ডিসেম্বর নাটোরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত একটা মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত নাটোর সদর থানাকে মামলাটি তদন্তের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।

নাটোর সদর থানা ২০২৩ সালের ৫ জুলাই নাটোর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এক বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। যার নম্বর ২৬-৫৬। উক্ত পুলিশ প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে বাদীনী না রাজি দিলে আমলি আদালত মামলাটি পুনরায় পুলিশ সুপার পিবিআই নাটোরকে তদন্তের নির্দেশ দেন। যার স্মারক নম্বর ২৫/২৫/২৩ ও ৩১-১০-২৩ ইং। পুলিশ সুপার পিবিআই নাটোর এই মামলার তদন্তভার পুলিশ পরিদর্শক মোঃ নাসিরুল ইসলাম পুলিশ প্রদান করে৷ মোঃ নাসিরুল ইসলাম বাদী কর্তৃক প্রভাবিত হয়ে বিজ্ঞ অতিরিক্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত নাটোর জেলার সদর থানা বরাবর আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন ও মনগড়া প্রতিবেদন দাখিল করেন যার স্মারক নম্বর পিবিআই নাটোর ২১১ – ১৭-১২৪। বাস্তবে বিন্দুমাত্র কোন সত্যতা নাই । প্রতিবেদনের প্রতিটি শব্দচয়ন উদ্দেশ্যমূলক যার দালিলিক প্রমাণ আছে। তদন্তকালে মহোদয়ের কাছে যা উপস্থাপন করব। নাসিরুল ইসলামকে তদন্তকালে বিভিন্ন দালিলিক প্রমাণ দেওয়ার পরেও তিনি প্রতিবেদনে তা উল্লেখ্য না করে মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন ও মনগড়া প্রতিবেদন দাখিল করেন। তিনি তদন্তকালীন আমাকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে জিজ্ঞাসার পাশাপাশি বিভিন্ন অপ্রাসঙ্গিক, আপত্তিকর ও বিব্রতকর কথা বলে আমাকে অসম্মানিত করেছেন এবং হীন উদ্দেশ্যে চরিত্র হননের চেষ্টা করেছেন। তদন্তকালীন তার বিব্রতকর প্রশ্নে আমার নিজেকে খুবই অপমানিত ও অসহায় মনে হয়েছে। সুখ্যাত পিবিআই বাংলাদেশের কোন পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে এ ধরনের কর্মকাণ্ড মোটেও কাম্য নয়। তিনি জনগণের আস্থার প্রতীক পিবিআই এর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে। আমি এবং আমার পরিবার শারীরিক-মানসিক আর্থিক এবং সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, এখনো হচ্ছি। মহান পেশার একজন শিক্ষক হিসেবে সমাজে আমার একটা অবস্থান আছে। কিন্তু নাসিরুল ইসলাম আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট মনগড়া ভিত্তিহীন অপ্রাসঙ্গিক অসম্মানজনক ব্যবহার করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে আমার চরিত্রে কালিমা লেপনের চেষ্টা করেছেন৷ তার হীন উদ্দেশ্য তৈরি করা আদালতে দাখিলকৃত প্রতিবেদন আমাদের ব্যক্তিগত পারিবারিক সামাজিক জীবনে ও আমার কর্মক্ষেত্রে ভীষণভাবে খারাপ প্রভাব ফেলেছে। কিন্তু নাসিরুল ইসলামের মত অসৎ এবং দুর্নীতিগ্রস্ত পুলিশ কর্মকর্তার কারণে পুলিশ ও পিবিআইয়ের উপর সাধারণ জনগণের সম্পূর্ণভাবে আস্থা হারিয়ে যাবে৷ নাসিরুল ইসলাম অসৎ কর্মকাণ্ড শুধু আমার পরিবারের সম্মানহানি করেনি, সেই সাথে পিবিআই বাংলাদেশকে কুলুষিত করেছে। আমাদেরকে অন্যায়ভাবে বিপদগ্রস্ত অবস্থায় ফেলেছেন। তাই আমি এবং আমার পরিবার ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় এবং এ ধরনের অসৎ ও দুর্নীতিগ্রস্ত পুলিশের কর্মকাণ্ড নজরদারির আওতায় এনে সুষ্ঠ তদন্তপূর্বক বাদী কর্তৃক প্রভাবিত পুলিশ পরিদর্শক নাসিরুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে মহোদয়ের শরণাপন্ন হয়েছি৷

বক্তব্যে নাহিদ আক্তার শবনম আরো বলেন, ২০২২ সালের জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে আমার স্বামী ও শ্বশুর শ্বাসুরী যৌতুকেন জন্য চাপ দিলে আমি দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আমার স্বামী তার পরিবারের লোকজনের উস্কানিতে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে আমি আমার শ্বশুর বাড়িতে স্বামীর খোঁজে গেলে তারা আমাকে বাড়িতে উঠতে দেয় না এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। তার পরে আমার পরিবার আমার শ্বশুরের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে আমার শ্বশুর তাদের বাড়িতে যেতে বলে। তখন আমরা গেলে আমার স্বামীর পরিবার আমাদের অপমান অপদস্ত করে। আমার কাছ থেকে তালাক চায় আমি শ্বশুর বাড়িতে থেকে যেতে চাইলে তারা আমার গায়ে হাত তোলে এবং আমাকে টেনে হিচড়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন। তারা বিভিন্নভাবে আমার কাছ থেকে তালাক নেওয়ার চেষ্টা করে। তখন আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করি।আমি মামলা করার কারনে এবং তালাক না দেওয়ায় আমার শ্বাশুড়ি আমাদের উপরে মিথ্যা মামলা করেছে। আরজিতে ঘটনার তারিখ উল্লেখ করেছে ০৯/১২/২২ইং। সেই তারিখ অলৌকিক ক্ষমতার আলোকে আদালতের মত স্পর্শকাতর জায়গায় মামলার তারিখ ০৫/০৮/২২ইং পরিবর্তন করে পিবিআই পরিদর্শক নাসিরুল ইসলাম অর্থের বিনিময়ে সাজানো ও ভুয়া একটি বানোয়াট প্রতিবেদন বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করে৷ আমি সুষ্ঠু বিচারের স্বার্থে পূর্ণ তদন্তের আবেদন করেছি৷

উক্ত অভিযোগের আলোকে গত ১৫ই এপ্রিল সরেজমিনে নাটোর সদর করোটা গ্রাম গিয়ে জিজ্ঞাসাবদ করে গ্রামের একাধিক ময়মুরুব্বীরা বলেন, শবনম স্ত্রী হিসেবে যাতায়াত করত। এই গ্রামের পুত্রবধূ হিসেবে ভালই। শবনমের মা বাবা ভাই বোন এসে মারধরের ঘটনা ঘটেছে এটা সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। কারণ মেয়ের বাবা উপস্থিত লোকের সামনে একজন নারীকে শ্লীলতাহানি ও শারীরিক নির্যাতন করলো এখানকার গ্রামবাসী কেও দেখতে পেলো না। মূলত ঘটনা স্বামী স্ত্রীর দ্বন্দ্বের কারনে ছেলের বউ ও তার বিহাইসহ পরিবারের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেছেন সুফিয়া বেগম।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন পুলিশ পরিদর্শক পিবিআই মোঃ নাসিরুল ইসলাম বলেন, বিবাদী নাহিদ আক্তার শবনম বিভিন্ন প্রভাবশালী লোক দিয়ে আমাকে তদবির করিয়েছেন। মামলাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হয়েছে৷ আমি তদন্ত করেছি সুষ্ঠুভাবে। যারা জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি কোর্ট ফায়সালা করবে৷

নামাজের সময় সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৩:৫৫ পূর্বাহ্ণ
  • ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ
  • ৪:৩২ অপরাহ্ণ
  • ৬:৩৭ অপরাহ্ণ
  • ৮:০০ অপরাহ্ণ
  • ৫:১৬ পূর্বাহ্ণ