আ.লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ২০

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে । এতে পুলিশসহ অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গত ৮ অক্টোবর দীর্ঘ ১২ বছর পরে আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী শাহাজান খান ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাখওয়াত হোসেন শফিকসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থেকেও দুইটি গ্রুপের অন্তদ্বন্দ্বের কারণে কমিটি ঘোষনা ছাড়াই সম্মেলন স্থগিত ঘোষনা করেন।

সম্মেলন স্থগিত হলেও গত ১৯ নভেম্বর  দুপুরে তিস্তা ব্যারাজের অবসর রেষ্ট হাউসে জেলা আওয়ামী লীগের সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সিরাজুল হক গ্রুপের নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে সাবেক উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মোহাম্মদ আলীকে সভাপতি ও সাবেক সম্পাদক রফিকুল আলমকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭১ সদস্যের উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণা দেয়ায় অপর গ্রুপটি হাইব্রীড কমিটি বাতিলের দাবিতে দলীয় কার্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিলসহ টানা কর্মসূচি পালন করে আসছে।

এদিকে নতুন কমিটি নিয়ে শনিবার বিকেলে বিএনপি জামাতায়াতের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে সংঘর্ষ এড়াতে পূর্ব থেকেই ঘটনাস্থলে  একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। নতুন কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও সম্পাদক রফিকুল আলমের নেতৃত্বে বুড়িরবাজার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে দলীয় কার্যালয়ের দিকে এগিয়ে আসছিল। মিছিলটিতে বেশ কিছু নেতাকর্মী প্রকাশ্যে দেশিয় অস্ত্র প্রদর্শন করে। এতে আতংকিত হয়ে পড়ে সাধারণ মানুষরা। মুহুর্তে সকল দোকান-পাটসহ লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।

একই সময় পদবঞ্চিত গ্রুপটি দলীয় কার্যালয়ে হাইব্রীড কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। নতুন কমিটি গ্রুপের মিছিল দলীয় কার্যালয়ে পৌঁছলে উভয় পক্ষের উস্কানীমুলক স্লোগানে উভয় পক্ষে ইটপাকটল ছুড়ে সংঘর্ষে জড়ায়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জসহ ৩টি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে ইটপাটকলের আঘাতে ৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। এছাড়াও পুলিশের লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেডের আতংকে পালাতে গিয়ে উভয় পক্ষের ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুল ইসলাম বলেন, দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ছিল। দুইটি গ্রুপই মুখোমুখি অবস্থানে পৌঁছলে উস্কানিমুলক স্লোগানে সংঘর্ষে জড়ায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৩ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছে। পাথরের আঘাতে ৫/৬জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।