সিলেটের খাদিমনগরে আব্দুল মুতলিব হত্যা মামলায় দুই জনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন আদালত। দ-প্রাপ্ত আসামীদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদ- দেওয়া হয়।
গতকতাল মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিলেট বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মো. শাহাদৎ হোসেন প্রামানিক এ রায় প্রদান করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, সিলেটের বিয়ানীবাজার থানার খাড়াউড়া গ্রামের মৃত সুরুজ আলীর ছেলে, বর্তমানে সিলেটের ইসলামপুর ধনুকান্দি চামেলীবাগ আবাসিক এলাকার ১০৫ নম্বর বাসার বাসিন্দা মো. শওকত আলী এবং সিলেট নগরের টিলাগড় ব্রাক্ষনপাড়ার মৃত আজগর আলীর ছেলে আব্দুর রহিম। দ-প্রাপ্তরা বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
আদাল সূত্রে জানা গেছে, খাদিমনগর এলাকার ধনুকান্দি গ্রামের মৃত সাইয়িদ উল্লাহর ছেলে আব্দুল মুতলিবের সাথে শওকত আলী ও আব্দুর রহিমের জমি কেনাবেচা সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। এ নিয়ে ১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল শওকত আলী ও আব্দুর রহিম ডেকে নিয়ে আব্দুল মুতলিবকে হত্যা করে নগরের আরামবাগ এলাকায় ফেলে যায়। বাড়ি ফিরতে না দেখে পরদিন ২৪ এপ্রিল কোতোয়ালী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার ভাই মো. তাহির আলী।
কিন্তু, আরামবাগ এলাকার লোকজন আব্দুল মুতলিবের মরদেহ উদ্ধার করে বেওয়ারিশ হিসেবে নগরের মানিকপীর (র.) টিলায় দাফন করেন। পরবর্তীতে সিলেট জেলা প্রশাসনের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৫ এপ্রিল পুলিশ আব্দুল মুতলিবের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে এবং তা সনাক্ত করে তার পরিবার। পরে, আইনি প্রক্রিয়া শেষে আব্দুল মুতলিবের লাশ হযরত শাহপরান (র.) মাজার কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত আব্দুল মুতলিবের ভাই মো. তাহির আলী কোতোয়ালী থানায় শওকত আলী ও আব্দুর রহিমের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৪ জুলাই তৎকালীন কোতোয়ালী থানার এসআই আবু জাফর দুই জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র নং-৩৮৯) দাখিল করেন এবং ২০০১ সালের ১৭ জুলাই চার্জগঠন করে এ মামলার বিচারকাজ শুরু করেন আদালত।
দীর্ঘ শুনানী ও ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) আদালত আসামি মো. শওকত আলী ও আব্দুর রহিমকে ১৮৬০ সালের পেনাল কোড এর ৩৬৪/৩০২/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদের প্রত্যেককে পেনাল কোড এর ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদ-সহ ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনরাশ্রমে কারাদ- এবং পেনাল কোডের ৩৬৪ ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদ- ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ মাসের বিনাশ্রমে কারাদন্ডে দ-িত করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট মো. ফখরুল ইসলাম ও আসামীপক্ষে ষ্টেইট ডিফেন্স অ্যাডভোকেট মো. আমিরুল ইসলাম মামলাটি পরিচালনা করেন।
আপনার মতামত লিখুন :