চট্টগ্রামে পূঁজামণ্ডপে গান গাওয়া নিয়ে ছাত্রশিবিরের অবস্থান তুলে ধরেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে ছাত্রশিবিরের অবস্থান তুলে ধরেন তিনি। ফেসবুক পোস্টে জাহিদুল ইসলাম লিখেছেন, ‘এক: এই ঘটনার সঙ্গে অনেকে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখছেন। আমি দায় নিয়ে বলছি, এর সঙ্গে ছাত্রশিবিরের কোনও সম্পৃক্ততা নেই। দুই: শিবির কারও ধর্মীয় অনূভুতিতে আঘাত করে এমন কাজকে কখনোই সমর্থন করে না। তাই এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। তিন: ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে স্পষ্ট দাবি জানাচ্ছি, একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে প্রকৃত সত্য সবার সামনে উঠে আসুক। কেউ দোষী হলে তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে এসে শাস্তি দেওয়া হোক। চার: সত্যতা যাচাই না করেই যারা বিভিন্ন সময়ে শিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালায়, তারা একটা সময় গিয়ে নিজেদের বিবেকের কাছেই প্রশ্নবিদ্ধ হবেন। এ ধরনের কাজ থেকে ভবিষ্যতে বিরত থাকার অনুরোধ করছি।’
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামে শারদীয় দুর্গোৎসবের মঞ্চে ইসলামি সংগীত পরিবেশন করেছেন একদল তরুণ। অভিযোগ উঠেছে, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাংস্কৃতিক সংগঠন চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সদস্যরা এটি করেছেন। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে নগরের জেএম সেন হলের শারদীয় দুর্গোৎসবের মঞ্চে এ ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় এ বিষয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (পিআর) কাজী মো. তারেক আজিজ। নগরের দামপাড়া পুলিশ লাইনসে সিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ের নিচতলার মিডিয়া সেন্টারে এই প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হবে। এতে সৃষ্ট পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে বলে জানান তিনি। এর আগে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মণ্ডপে অনুষ্ঠানের মঞ্চে ইসলামি সংগীত পরিবেশন করেন একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম রাতেই ওই পূজামণ্ডপে গিয়ে এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের আশ্বাস দেন। একইসঙ্গে পূজামণ্ডপ এলাকায় বিপুল সংখ্যক সেনা, র্যাব ও পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। জানা গেছে, পূজা উদ্যাপন কমিটির এক নেতার আমন্ত্রণে সংগঠনটি পূজামণ্ডপে গান করতে যায়। সংগঠনটির সদস্যরা শাহ আবদুল করিমের বিখ্যাত গান ‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম’ এবং ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম, বিশ্ব মানুষের কল্যাণে স্রষ্টার এই বিধান’ গান দুটি পরিবেশন করে। এর মধ্যে ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম’ গানটির ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম নগর পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল জানান, সংগঠনটির সদস্যরা যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তের আমন্ত্রণে গান পরিবেশন করেছেন। তারা আমাদের অনুমতি নিয়ে এসেছে। অন্যদিকে, সংগঠনের সভাপতি সেলিম জামান দাবি করেন, তারা কোনো জোরপূর্বক কাজ করেননি, বরং দাওয়াত পেয়ে গান করতে গিয়েছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :