
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাজায় ত্রাণ প্রবেশ নিশ্চিত করতে ইসরায়েল বাধ্য: আইসিজে; ইউএনআরডব্লিউএর নিরপেক্ষতা বজায় রাখার পক্ষে আদালতের মত। নেদারল্যান্ডসের হেগভিত্তিক আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) বুধবার (২২ অক্টোবর) এক আদেশে বলেছেন, দখলদার শক্তি হিসেবে ইসরায়েল গাজায় মানবিক ত্রাণ সহায়তা প্রবেশের সুযোগ করে দিতে বাধ্য। এটি গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর আইসিজের তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ আদেশ।
ত্রাণ সরবরাহ এবং ইউএনআরডব্লিউএ: ত্রাণ সরবরাহের বিষয়ে জারি করা এই আদেশে আইসিজে আরও মন্তব্য করেছে যে, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করা জাতিসংঘের অধীন ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ (UNRWA) গাজায় সহায়তা করতে গিয়ে কোনো প্রকার নিরপেক্ষতা লঙ্ঘন করেনি। এর আগে গত ডিসেম্বরে ইসরায়েল গাজায় ত্রাণ সরবরাহে ইউএনআরডব্লিউএর কার্যক্রমকে অবৈধ ঘোষণা করে আইন জারি করে এবং সংস্থাটির অনেক কর্মী হামাসের সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করে। ইসরায়েলের এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ আইসিজের কাছে আইনি মতামত চেয়ে আবেদন করেছিল। তবে আইসিজে গতকালের আদেশে জানায়, ইউএনআরডব্লিউএর কর্মীদের বিরুদ্ধে আনা কোনো অভিযোগ ইসরায়েল প্রমাণ করতে পারেনি।
আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি: যদিও আন্তর্জাতিক আদালতের আদেশ মানার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, তবুও জাতিসংঘ ও অন্যান্য ত্রাণ সংস্থাগুলোর কাজে সহায়তা করতে এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে, আইসিজের এই আদেশকে জাতিসংঘে ইসরায়েলি দূত ‘লজ্জাজনক’ হিসেবে মন্তব্য করেছেন।
আইসিজে’র পূর্ববর্তী আদেশসমূহ: দুই বছরের গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের মধ্যে এটি আইসিজের তৃতীয় আদেশ। এর আগে: গত বছরের জুলাই: আইসিজের আদেশে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দখলদারিত্বকে সম্পূর্ণভাবে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। একই বছরের জানুয়ারি: আইসিজে ইসরায়েলকে গাজায় গণহত্যা বন্ধে সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে আদেশ জারি করে। উল্লেখ্য, গাজায় আগ্রাসন শুরুর পর ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকা আইসিজেতে মামলা দায়ের করেছিল, যেখানে পরে অন্যান্য দেশ যুক্ত হয়।
সংঘাতের প্রেক্ষাপট: ১৬ বছরের ইসরায়েলি অবরোধ ভাঙতে হামাসসহ ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনগুলো ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের মূল ভূখণ্ড লক্ষ্য করে অভিযান চালায় এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায়। এর প্রতিক্রিয়ায় গাজায় আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েল। দুই বছরের আগ্রাসনে গাজায় ৬৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গত ১০ অক্টোবর নতুন করে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুসারে সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং মৃত জিম্মিদের লাশ ফেরতের প্রক্রিয়া চলছে।

Reporter Name 



















