০৮:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

    গণভোটেই ‘বিরোধ’ মেটাতে চায় জামায়াত, বিএনপি চায় সংসদে

    • Reporter Name
    • Update Time : ০৬:০০:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫
    • ৩৩ Time View

    সব দলের ঐকমত্য: গণভোটেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি
    ‘নোট অব ডিসেন্ট’ নিয়ে ভিন্ন অবস্থানে বিএনপি ও জামায়াত

    স্টাফ রিপোর্টার:
    জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সর্বশেষ বৈঠকে গণভোটের মাধ্যমে জুলাই জাতীয় সনদকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ সব রাজনৈতিক দল। তবে প্রস্তাবিত সংস্কারের বেশ কয়েকটি বিষয়ে দলগুলোর ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বা আপত্তি রয়েছে। এসব আপত্তি কীভাবে নিষ্পত্তি হবে, তা নিয়ে ভিন্নমতে আছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী।

    বৈঠকে প্রস্তাবিত মূল সংস্কারের মধ্যে রয়েছে—উচ্চকক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি চালু করা, প্রধানমন্ত্রী দলীয় প্রধান থাকতে না পারা, রাষ্ট্রপতিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া, এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের নিয়োগ সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা। এসব প্রস্তাবের বেশ কয়েকটিতেই আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি। অন্যান্য দলও কিছু ইস্যুতে ভিন্নমত দিয়েছে।

    বিএনপির অবস্থান

    বিএনপি মনে করে, নোট অব ডিসেন্টের বিষয়গুলো আলাদাভাবে গণভোটে উপস্থাপনের প্রয়োজন নেই। দলটির মতে, জুলাই সনদের ওপর গণভোটের পর যে দল সংসদ নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট পাবে, সেই দল তাদের নোট অব ডিসেন্ট অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে পারবে।

    বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “জুলাই সনদ প্রণীত ও স্বাক্ষরিত হবে, সেটি সরকার ও নির্বাচন কমিশন প্রকাশ করবে। জনগণ জানবে সনদে কী আছে। এরপর নির্বাচন হবে, এবং যে দল জনম্যান্ডেট পাবে, তারা তাদের নোট অব ডিসেন্ট অনুযায়ী কাজ করবে।”

    তিনি আরও বলেন, “সনদে পিআর পদ্ধতির কথা বলা আছে, কিন্তু এর গঠন প্রণালি নিয়ে আমাদের নোট অব ডিসেন্ট রয়েছে। যারা ম্যান্ডেট পাবে, তারা তাদের অবস্থান অনুযায়ী বাস্তবায়ন করবে।”

    জামায়াতের অবস্থান

    অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী মনে করে, নোট অব ডিসেন্টগুলোর চূড়ান্ত নিষ্পত্তি গণভোটের মাধ্যমেই হওয়া উচিত। দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, “নোট অব ডিসেন্ট মানে হলো দলীয় দ্বিমত। এখন জনগণই ঠিক করবে কোনটা গ্রহণ করবে, কোনটা করবে না। গণভোটটাই হচ্ছে সুপ্রিম ল’।”

    তিনি আরও বলেন, “জনগণ যদি আমার নোট অব ডিসেন্ট গ্রহণ না করে, তাহলে সেটার কোনো আইনি গুরুত্ব থাকবে না। আর গ্রহণ করলে সেটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে।”

    আযাদ জানান, ঐকমত্য কমিশনই ঠিক করবে কীভাবে এসব নোট অব ডিসেন্ট গণভোটে উপস্থাপন করা হবে। “জুলাই সনদে তো লেখা থাকবে নোট অব ডিসেন্ট কোনটা। সেই অনুযায়ী জনগণ মতামত দেবে,” বলেন তিনি।

    কমিশনের পরবর্তী বৈঠক

    ঐকমত্য কমিশন জানায়, গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার বিষয়ে মৌলিক ঐক্যমত্য হয়েছে। তবে গণভোটের সময়, আয়োজনের প্রক্রিয়া (অধ্যাদেশ নাকি সাংবিধানিক আদেশ), এবং নোট অব ডিসেন্টের প্রতিফলন কীভাবে হবে—এসব বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

    এসব বিষয় নিয়ে আসন্ন বুধবার (৮ অক্টোবর) আবার বৈঠকে বসবে রাজনৈতিক দলগুলো ও ঐকমত্য কমিশন।

    ×
    10 November 2025 20:02


    Tag :

    Write Your Comment

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    Save Your Email and Others Information

    About Author Information

    জনপ্রিয় পোস্ট

    গণভোটেই ‘বিরোধ’ মেটাতে চায় জামায়াত, বিএনপি চায় সংসদে

    Update Time : ০৬:০০:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

    সব দলের ঐকমত্য: গণভোটেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি
    ‘নোট অব ডিসেন্ট’ নিয়ে ভিন্ন অবস্থানে বিএনপি ও জামায়াত

    স্টাফ রিপোর্টার:
    জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সর্বশেষ বৈঠকে গণভোটের মাধ্যমে জুলাই জাতীয় সনদকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ সব রাজনৈতিক দল। তবে প্রস্তাবিত সংস্কারের বেশ কয়েকটি বিষয়ে দলগুলোর ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বা আপত্তি রয়েছে। এসব আপত্তি কীভাবে নিষ্পত্তি হবে, তা নিয়ে ভিন্নমতে আছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী।

    বৈঠকে প্রস্তাবিত মূল সংস্কারের মধ্যে রয়েছে—উচ্চকক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি চালু করা, প্রধানমন্ত্রী দলীয় প্রধান থাকতে না পারা, রাষ্ট্রপতিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া, এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের নিয়োগ সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা। এসব প্রস্তাবের বেশ কয়েকটিতেই আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি। অন্যান্য দলও কিছু ইস্যুতে ভিন্নমত দিয়েছে।

    বিএনপির অবস্থান

    বিএনপি মনে করে, নোট অব ডিসেন্টের বিষয়গুলো আলাদাভাবে গণভোটে উপস্থাপনের প্রয়োজন নেই। দলটির মতে, জুলাই সনদের ওপর গণভোটের পর যে দল সংসদ নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট পাবে, সেই দল তাদের নোট অব ডিসেন্ট অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে পারবে।

    বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “জুলাই সনদ প্রণীত ও স্বাক্ষরিত হবে, সেটি সরকার ও নির্বাচন কমিশন প্রকাশ করবে। জনগণ জানবে সনদে কী আছে। এরপর নির্বাচন হবে, এবং যে দল জনম্যান্ডেট পাবে, তারা তাদের নোট অব ডিসেন্ট অনুযায়ী কাজ করবে।”

    তিনি আরও বলেন, “সনদে পিআর পদ্ধতির কথা বলা আছে, কিন্তু এর গঠন প্রণালি নিয়ে আমাদের নোট অব ডিসেন্ট রয়েছে। যারা ম্যান্ডেট পাবে, তারা তাদের অবস্থান অনুযায়ী বাস্তবায়ন করবে।”

    জামায়াতের অবস্থান

    অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী মনে করে, নোট অব ডিসেন্টগুলোর চূড়ান্ত নিষ্পত্তি গণভোটের মাধ্যমেই হওয়া উচিত। দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, “নোট অব ডিসেন্ট মানে হলো দলীয় দ্বিমত। এখন জনগণই ঠিক করবে কোনটা গ্রহণ করবে, কোনটা করবে না। গণভোটটাই হচ্ছে সুপ্রিম ল’।”

    তিনি আরও বলেন, “জনগণ যদি আমার নোট অব ডিসেন্ট গ্রহণ না করে, তাহলে সেটার কোনো আইনি গুরুত্ব থাকবে না। আর গ্রহণ করলে সেটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে।”

    আযাদ জানান, ঐকমত্য কমিশনই ঠিক করবে কীভাবে এসব নোট অব ডিসেন্ট গণভোটে উপস্থাপন করা হবে। “জুলাই সনদে তো লেখা থাকবে নোট অব ডিসেন্ট কোনটা। সেই অনুযায়ী জনগণ মতামত দেবে,” বলেন তিনি।

    কমিশনের পরবর্তী বৈঠক

    ঐকমত্য কমিশন জানায়, গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার বিষয়ে মৌলিক ঐক্যমত্য হয়েছে। তবে গণভোটের সময়, আয়োজনের প্রক্রিয়া (অধ্যাদেশ নাকি সাংবিধানিক আদেশ), এবং নোট অব ডিসেন্টের প্রতিফলন কীভাবে হবে—এসব বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

    এসব বিষয় নিয়ে আসন্ন বুধবার (৮ অক্টোবর) আবার বৈঠকে বসবে রাজনৈতিক দলগুলো ও ঐকমত্য কমিশন।

    ×
    10 November 2025 20:02