
ভোজ্যতেলের দাম বাড়েনি, দাম বৃদ্ধির ঘোষণা ‘অবৈধ’: বাণিজ্য উপদেষ্টা
পূর্বাচল থেকে বিশেষ প্রতিনিধি:
ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়নি বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। একইসঙ্গে, বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিভিওআরবিএমএ) দাম বাড়ানোর ঘোষণাকে তিনি ‘অবৈধ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আজ মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাজধানীর পূর্বাচলে এক অনুষ্ঠানে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বৃদ্ধি ইস্যুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা এ কথা জানান। উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে তেলের দাম বাড়ানো হয়নি। আমি এটা স্পষ্ট করে আপনাদেরকে এবং আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে জানিয়ে দিচ্ছি।” তিনি অভিযোগ করেন, “তেল কোম্পানির মালিকানাধীন কিছু কিছু মিডিয়া এরকম কিছু নিউজ তৈরি করছে বলে আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমি তাদেরকে অনুরোধ করব, এই ধরনের সংবেদনশীলতা তৈরি না করার জন্য।” উপদেষ্টা আরও বলেন, তেল একটি নিয়ন্ত্রিত পণ্য। এর মূল্য বৃদ্ধি হবে কি হবে না—এটার পুরো বিশ্লেষণ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় করে বাস্তবভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তিনি দৃঢ়ভাবে জানান, “এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।”
অ্যাসোসিয়েশনের ঘোষণা ‘অবৈধ’
এর আগে, সোমবার (১৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিভিওআরবিএমএ) দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম লিটারপ্রতি ৩ থেকে ১৩ টাকা পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিল। আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির কারণ উল্লেখ করে গতকাল সংস্থাটির নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম মোল্লা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছিল। নতুন দাম আজ (১৪ অক্টোবর) থেকেই কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। তবে, বাণিজ্য উপদেষ্টা এই ঘোষণাকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “ম্যানুফ্যাকচারার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেস রিলিজ দেওয়ার কোনো বৈধতা নেই; যতক্ষণ পর্যন্ত না এটা আইন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক স্বীকৃত হয়।”
১৪ বছর আগের ফর্মুলা নিয়ে অসন্তুষ্ট উপদেষ্টা
ভোজ্যতেলের মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলতে গিয়ে উপদেষ্টা জানান, তেল একটি নিয়ন্ত্রিত পণ্য এবং এর মূল্য সমন্বয় করার ক্ষেত্রে ট্যারিফ কমিশন একটি ফর্মুলা ব্যবহার করে। এই ফর্মুলার ভিত্তিতেই পণ্যটির দাম বাড়ানো বা না বাড়ানো নির্দিষ্ট করা হয়। তবে তিনি বর্তমান ফর্মুলা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “এ ফর্মুলা প্রায় ১৪ বছর আগে তৈরি। যেটায় (ফর্মুলায়) আমি ব্যক্তিগতভাবে সন্তুষ্ট নই।” ফর্মুলাটি নতুন করে বিশ্লেষণের জন্য তিনি আইসিএমএবি (ICMAB) এবং ইন্সটিটিউট অফ চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টকে (ICAB) স্বতন্ত্রভাবে দায়িত্ব দিয়েছেন। উপদেষ্টা জানান, আইসিএমএবি থেকে একটি খসড়া প্রতিবেদন গতকাল তার হাতে এসে পৌঁছেছে, তবে আইসিএবি’র প্রতিবেদন এখনও আসেনি। উপদেষ্টা বলেন, “সুতরাং এরমধ্যে তেলের দাম বাড়ানো বা এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোনো অবকাশ নাই।” প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কবে নাগাদ তেলের দাম নির্ধারণ করা সম্ভব হবে জানতে চাইলে উপদেষ্টা জানান, “অতি দ্রুতই চেষ্টা করব।”

Reporter Name 


















