০৭:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

    পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে চলছে ভারতীয় ষড়যন্ত্র

    • Reporter Name
    • Update Time : ০৩:০০:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
    • ৩৬ Time View

    পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে ‘ভারতীয় ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ

    বাংলাদেশের ভূখণ্ডগত অখণ্ডতার অন্যতম স্পর্শকাতর এলাকা পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে ভারত ষড়যন্ত্র করছে বলে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক মহল থেকে প্রায়শই অভিযোগ তোলা হয়। সম্প্রতি এই অভিযোগ আরও তীব্র হয়েছে। এই ষড়যন্ত্রের অভিযোগগুলো মূলত দুটি প্রধান দিক থেকে আসে: ঐতিহাসিক সংঘাত এবং সাম্প্রতিক অস্থিতিশীলতা।

    সাম্প্রতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ (সাম্প্রতিক অস্থিতিশীলতা)

    সাম্প্রতিক সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে যেকোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা বা জাতিগত সংঘাত দেখা দিলে, তার পেছনে ভারতের ইন্ধন রয়েছে বলে বিভিন্ন পক্ষ দাবি করে। ‘ভুয়া’ ধর্ষণের অভিযোগ: উদাহরণস্বরূপ, সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি কিশোরীকে ধর্ষণের কথিত অভিযোগকে কেন্দ্র করে যে বিক্ষোভ ও সহিংসতা হয়েছিল, সেই প্রসঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ মন্তব্য করেন যে ধর্ষণের ঘটনাটি ‘ভুয়া’ এবং এটি ‘ভারতের ষড়যন্ত্র’। “পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে ভারত শেষ ট্রাম্প কার্ড খেলে এটিকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। একটা ভুয়া ধর্ষণের মধ্য দিয়ে তারা পাহাড়ি ও বাঙালিদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। “বিচ্ছিন্ন করার অপচেষ্টা: বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি অভিযোগ করে যে, একটি মহল বিদেশি শক্তির (ভারতের) সহায়তায় পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করার বা অস্থিতিশীল করে তোলার পাঁয়তারা করছে। ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ নামের একটি সংগঠন এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশও করেছিল।

    ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট (শান্তি চুক্তির আগে ও পরে) পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক সংঘাতের (পার্বত্য চট্টগ্রাম সংঘাত, ১৯৭৭-১৯৯৭) সময় থেকেই ভারতের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে: শান্তি বাহিনীর সহায়তা: পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (PCJSS) সশস্ত্র শাখা শান্তি বাহিনীকে ভারত সরকার সীমান্তে ঘাঁটি গড়তে সহায়তা করেছিল বলে বাংলাদেশের বহু পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে (উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুসারে)। শান্তি চুক্তির সমালোচনা: ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি সই হওয়ার পরও এর সমালোচনা করা হয়। তৎকালীন বিরোধী দল বিএনপিসহ অনেকে অভিযোগ করেছিল যে চুক্তিটি চরম এক‌পে‌শে এবং এতে স্থানীয় বাঙালি নাগরিকদের অধিকার রক্ষা করা হয়নি, বরং অনেক ছাড় দেওয়া হয়েছিল, যা পরোক্ষভাবে এই অঞ্চলে বিদেশী প্রভাব বিস্তারের পথ সুগম করতে পারে। কৌশলগত স্বার্থ: ভারত তার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর নিরাপত্তা এবং ভূ-কৌশলগত কারণে সবসময়ই পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি নিয়ে সংবেদনশীল। বাংলাদেশের সমালোচকরা মনে করেন, এই কৌশলগত স্বার্থ হাসিলের জন্যই ভারত নানাভাবে এই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে।

    উল্লেখ্য, এই অভিযোগগুলো বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে উত্থাপিত হলেও, ভারত সরকার বা কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা সাধারণত এসব অভিযোগ সরাসরি স্বীকার করে না।

    আপনি কি পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের বর্তমান পরিস্থিতি বা এই অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান?

    ×
    10 November 2025 19:24


    Tag :

    Write Your Comment

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    Save Your Email and Others Information

    About Author Information

    জনপ্রিয় পোস্ট

    পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে চলছে ভারতীয় ষড়যন্ত্র

    Update Time : ০৩:০০:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

    পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে ‘ভারতীয় ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ

    বাংলাদেশের ভূখণ্ডগত অখণ্ডতার অন্যতম স্পর্শকাতর এলাকা পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে ভারত ষড়যন্ত্র করছে বলে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক মহল থেকে প্রায়শই অভিযোগ তোলা হয়। সম্প্রতি এই অভিযোগ আরও তীব্র হয়েছে। এই ষড়যন্ত্রের অভিযোগগুলো মূলত দুটি প্রধান দিক থেকে আসে: ঐতিহাসিক সংঘাত এবং সাম্প্রতিক অস্থিতিশীলতা।

    সাম্প্রতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ (সাম্প্রতিক অস্থিতিশীলতা)

    সাম্প্রতিক সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে যেকোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা বা জাতিগত সংঘাত দেখা দিলে, তার পেছনে ভারতের ইন্ধন রয়েছে বলে বিভিন্ন পক্ষ দাবি করে। ‘ভুয়া’ ধর্ষণের অভিযোগ: উদাহরণস্বরূপ, সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি কিশোরীকে ধর্ষণের কথিত অভিযোগকে কেন্দ্র করে যে বিক্ষোভ ও সহিংসতা হয়েছিল, সেই প্রসঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ মন্তব্য করেন যে ধর্ষণের ঘটনাটি ‘ভুয়া’ এবং এটি ‘ভারতের ষড়যন্ত্র’। “পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে ভারত শেষ ট্রাম্প কার্ড খেলে এটিকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। একটা ভুয়া ধর্ষণের মধ্য দিয়ে তারা পাহাড়ি ও বাঙালিদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। “বিচ্ছিন্ন করার অপচেষ্টা: বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি অভিযোগ করে যে, একটি মহল বিদেশি শক্তির (ভারতের) সহায়তায় পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করার বা অস্থিতিশীল করে তোলার পাঁয়তারা করছে। ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ নামের একটি সংগঠন এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশও করেছিল।

    ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট (শান্তি চুক্তির আগে ও পরে) পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক সংঘাতের (পার্বত্য চট্টগ্রাম সংঘাত, ১৯৭৭-১৯৯৭) সময় থেকেই ভারতের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে: শান্তি বাহিনীর সহায়তা: পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (PCJSS) সশস্ত্র শাখা শান্তি বাহিনীকে ভারত সরকার সীমান্তে ঘাঁটি গড়তে সহায়তা করেছিল বলে বাংলাদেশের বহু পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে (উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুসারে)। শান্তি চুক্তির সমালোচনা: ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি সই হওয়ার পরও এর সমালোচনা করা হয়। তৎকালীন বিরোধী দল বিএনপিসহ অনেকে অভিযোগ করেছিল যে চুক্তিটি চরম এক‌পে‌শে এবং এতে স্থানীয় বাঙালি নাগরিকদের অধিকার রক্ষা করা হয়নি, বরং অনেক ছাড় দেওয়া হয়েছিল, যা পরোক্ষভাবে এই অঞ্চলে বিদেশী প্রভাব বিস্তারের পথ সুগম করতে পারে। কৌশলগত স্বার্থ: ভারত তার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর নিরাপত্তা এবং ভূ-কৌশলগত কারণে সবসময়ই পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি নিয়ে সংবেদনশীল। বাংলাদেশের সমালোচকরা মনে করেন, এই কৌশলগত স্বার্থ হাসিলের জন্যই ভারত নানাভাবে এই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে।

    উল্লেখ্য, এই অভিযোগগুলো বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে উত্থাপিত হলেও, ভারত সরকার বা কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা সাধারণত এসব অভিযোগ সরাসরি স্বীকার করে না।

    আপনি কি পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের বর্তমান পরিস্থিতি বা এই অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান?

    ×
    10 November 2025 19:24