লিবিয়ায় মানব পাচার চক্রের প্রধান আসামি রকিবুল ইসলামসহ চারজনকে আটক করেছে যশোর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
আটকরা হলেন নড়াইলের কালিয়া উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের রকিবুল ইসলাম ফারাজি, যশোরের অভয়নগরের ধূলগ্রামের আরশাদ আলীর মেয়ে বর্তমানে খুলনার ফুলতলা উপজেলার বেজেরডাঙ্গা গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী শিরিনা আক্তার, অভয়নগর উপজেলার ধূলগ্রামের আরশাদ আলীর স্ত্রী হাফিজা বেগম ও আরশাদ আলীর মেয়ে সুমনা আক্তার।
পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন জানান, ১০ ডিসেম্বর পিবিআই অফিস থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্ত করে দেখা গেছে মা হাফিজা ও মেয়ে সুমনার অ্যাকাউন্টে মার্চ মাসে ৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হাবিবুর রহমান বলেন, অন্য একটি মামলার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পিবিআই অফিসে আটকদের ডাকা হয়। এরপর তাদেরকে মানব পাচার মামলায় আটক করা হয়েছে।
কালিয়া উপজেলার চন্দ্রপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম মৃধা জানান, ১১ ফেব্রুয়ারি তার ছেলে নাইম মৃধা ও ভাগনে জহিরুল ইসলাম বৈধভাবে লিবিয়ায় যায়। লিবিয়ায় যাওয়ার পর তার ছেলে ও ভাগনে তাকে জানায় কালিয়া থানার সাতবাড়িয়া গ্রামের এক ব্যক্তি তাদেরকে বেশি বেতনে লিবিয়া থেকে ইতালিতে পাঠিয়ে দিতে পারবে। তাদের বেতন হবে মাসিক ১ লাখ টাকা। রবিউল ইসলাম মৃধাকেও সেই ব্যক্তি ফোন করে তার ছেলে নাইম মৃধা ও ভাগনে জহিরুল ইসলামকে নিরাপদে ইতালিতে পাঠিয়ে দেবে মর্মে আশ্বস্ত করে। অজ্ঞাত ব্যক্তির পরিচয় জানতে না পারায় রবিউল ইসলাম মৃধা তার ছেলে নাইম মৃধা ও ভাগনে জহিরুল ইসলামকে ইতালিতে পাঠাতে অনীহা প্রকাশ করেন। এর ৫-৬ দিন পর লিবিয়া থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির মাধ্যমে রবিউল ইসলাম মৃধাকে মোবাইলে ফোন করে নাইম মৃধা ও ভাগনে জহিরুল ইসলামকে আটক করে মুক্তিপণ দাবি করে মারপিট করেন।
রবিউল ইসলামকে বলেন, আপনার ছেলে ও ভাগনেকে বাঁচাতে হলে বিকাশ ও ব্যাংকে টাকা পাঠাতে হবে। পরবর্তীতে রবিউল ইসলাম মৃধা বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে ব্যাংক ও বিকাশের মাধ্যমে ছয় লাখ ৬০ হাজার টাকা পাঠায়। এরপর থেকে রবিউল ইসলাম মৃধার ছেলে ও ভাগনের সঙ্গে তার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনায় রবিউল ইসলাম মৃধা নড়াইল মানবপাচার প্রতিরোধ দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে করেন। পরে আদালতের আদেশে যশোর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে এসআই (নিঃ) হাবিবুর রহমানকে নিয়োগ করেন। মামলাটি অনুসন্ধানে প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করে তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেন।
আপনার মতামত লিখুন :