রমজান মাসকে সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ অব্যাহত রাখতে মজুতদারদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (৩ মার্চ) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত জেলা প্রশাসক সম্মেলনে-২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রমজান মাসে আমাদের কিছু কিছু মানুষ থাকে সব সময় মজুতদারি করে দাম বাড়িয়ে কিছু মুনাফা লুটতে চায়। সেদিকে বিশেষভাবে নজর আমাদের দিতে হবে। আশু করণীয় একটা কাজ আমাদের সামনে। কোথাও যেন ভোক্তাদের হয়রানি হতে না হয়। সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। আমাদের দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে হবে। পর নির্ভরশীলতা আমাদের কমাতে হবে। এটা যে আমরা করতে পারি, সেটা আমরা অনেক ক্ষেত্রে প্রমাণ করেছি। সেদিকে নজর একান্তভাবে দরকার। তিনি আরও বলেন, ‘সরবরাহের ক্ষেত্রেও নানা সমস্যার সৃষ্টি হয় অথবা একটা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হয়। কেউ কেউ মজুতদারি করে পণ্য পচিয়ে ফেলবে কিন্তু
চার দিনব্যাপী ডিসি সম্মেলন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে এ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। ২০২৩ সালে এই সম্মেলন তিন দিন হলেও এবার ৩ থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এবারের সম্মেলনে ৫৬টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ, কার্যালয় ও সংস্থা সম্পর্কে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রায় ৩৫০টি প্রস্তাব জমা দিয়েছেন জেলা প্রশাসকরা। গত বছর এই প্রস্তাবের সংখ্যা ছিল ২৪৫টি। ফলে গত বছরের চেয়ে এবার একশর বেশি প্রস্তাব করেছেন ডিসিরা।
প্রতিবছর বেশির ভাগ প্রস্তাব থাকে ডিসি ও ইউএনওদের ক্ষমতা বা দায়িত্বের পরিধি বাড়ানো ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিসংক্রান্ত। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এবারের ডিসি সম্মেলনে প্রথমবারের মতো সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিবরা তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন ও পরামর্শ দেবেন। এ জন্য সম্মেলনের প্রথম দিন রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ‘উন্নয়নে মাঠ প্রশাসন’ শীর্ষক এক আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছে। আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিবরা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন শনিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, মোট ৫৬টি মন্ত্রণালয়/বিভাগ/সংস্থার মন্ত্রী/উপদেষ্টা/প্রতিমন্ত্রী/সিনিয়র সচিব/সচিবরা সম্মেলনে অংশ নেবেন। চার দিনে স্পিকার, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে জেলা প্রশাসকরা সৌজন্য সাক্ষাৎ ও নির্দেশনা গ্রহণ ও মতবিনিময় করবেন। এ ছাড়া প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ও সামরিক-বেসামরিক সমন্বয়বিষয়ক অধিবেশন সংযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি উদ্বোধন অনুষ্ঠান, একটি স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় এবং একটি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও নির্দেশনা গ্রহণ এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা দুটি। গত বছর তিন দিন সম্মেলন হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আসলে তিন দিনে সকল আলোচনা সম্ভব হয় না, সেজন্য এবার চার দিনব্যাপী সম্মেলন হবে। এই চার দিনে প্রধান বিচারপতি ও স্পিকারের সঙ্গে অধিবেশন থাকবে। তবে রাষ্ট্রপতি দেশে না থাকায় তার সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে না। প্রতিবছর জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে প্রস্তাব চাওয়া হয়। এবারও প্রস্তাব আসছে। সব মিলিয়ে সম্মেলনে এবার ৩৫৬টি আলোচ্য বিষয় থাকছে।
প্রধান আলোচ্য বিষয়ে থাকছে, ভূমি ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যক্রম জোরদারকরণ; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম; স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসৃজন ও দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন; সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী কর্মসূচি বাস্তবায়ন; তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ই-গভর্ন্যান্স; শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ; স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ; পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণরোধ; ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সমন্বয়। বাজারে দেবে না—এই জাতীয় অবস্থার সৃষ্টি করে। সেই দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি এবং কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। শেখ হাসিনা বলেন, ‘রমজান মাস সামনে রেখেই এই কথাগুলো আমি সবাইকে বললাম। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেন সাধারণ মানুষের কাছে যথাযথভাবে পৌঁছাতে পারে সেদিকে সবাইকে যথাযথভাবে নজর দিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ, কোভিড-১৯ এর অতিমারি, যার প্রভাব সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে পড়েছে। পৃথিবীতে এখন এমন এমন দেশ আছে যেখানে মূল্যস্ফীতি ৪০ ভাগও আছে।
এ রকম বহু দেশ এখন বিরাজ মান। বাংলাদেশও এর থেকে দূরে না। যদিও বাংলাদেশর মূল্যস্ফীতি এখনো ১০ ভাগের নিচেই আছে। তারপরও এটা একটা সমস্যা রয়ে গেছে। সেদিকে আমাদের সব থেকে বেশি লক্ষ রাখতে হবে যে, আমাদের বাজার পরিস্থিতি কেমন, আর তাছাড়া সামনে রোজা আসবে।’
আপনার মতামত লিখুন :