
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর হামলার পর তাদের দেখতে গিয়ে শিক্ষকদের বেতন, মর্যাদা এবং সরকারের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য নীতি নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন। শিক্ষকদের বেতন ও বাড়ি ভাড়া নিয়ে সমালোচনা: বেতন ও বাড়ি ভাড়া: তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রশ্ন রাখেন, শিক্ষকরা প্রতিদিন মন্ত্রণালয়ে সরকারের ‘বাদাম ও ফল-ফ্রুট’ খাওয়ার খরচের মতো বড় কিছু চাননি, তারা ন্যায্য বাড়ি ভাড়া চান। বাড়ি ভাতার অপ্রতুলতা: শিক্ষকের ১২,৫০০ টাকা বেতনের ২০ শতাংশ আসে ২৫০০ টাকা। তিনি চ্যালেঞ্জ করে বলেন, ঢাকা বা মফস্বলের কোথাও এই টাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকা সম্ভব নয়, অথচ শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ৫০০ টাকা দেওয়া হয়। দৈনন্দিন ব্যয়: বর্তমানে সকালে নাস্তা করতে ১৫০ টাকা লাগে এবং এক কাপ চায়ের দাম ১০ টাকা বলে তিনি উল্লেখ করেন। চাকরির পর বেতন: তিনি জানান, ৩২ বছর ধরে চাকরি করা তার পরিচিত একজন শিক্ষকের বর্তমান বেতন মাত্র ২২,০০০ টাকা। তিনি তুলনা করেন যে, ৩১ বছর চাকরি করে যে বেতন হয় তার ১৫ শতাংশ দিয়ে এক কেজি ইলিশ মাছ (দাম ২৮০০ টাকা) কিনতে হয়, অথচ এই বেতনের ২০ শতাংশও বাড়ি ভাড়া দেওয়া হয় না। শিক্ষকদের মর্যাদা ও জীবনযাত্রার মান: সামাজিক মর্যাদা: হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, শিক্ষকদের সবসময় পরিপাটি হয়ে সমাজে থাকতে হয় এবং তারা সমাজে উদাহরণস্বরূপ। কিন্তু ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বেতনে তাদের পক্ষে বুক ফুলিয়ে চলা সম্ভব হয় না এবং মাসের শেষ দশ দিন তাদের হীনমন্যতা নিয়ে চলতে হয়।
শিক্ষাক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় প্রহসন: তিনি বলেন, বিদেশে শিক্ষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত হলেও বাংলাদেশে শিক্ষকদের সবার খাওয়া-দাওয়া শেষে কিছু থাকলে দেওয়া হয়। তিনি শিক্ষকদের বেতন না দিয়ে ‘আন্তর্জাতিক মানের পড়াশোনা আশা করাকে রাষ্ট্রীয় প্রহসন’ বলে উল্লেখ করেন। প্রথম শ্রেণির নাগরিক: তিনি প্রশ্ন তোলেন, শিক্ষকদের প্রথম শ্রেণির নাগরিক হিসেবে মর্যাদা না দিলে তারা কীভাবে প্রথম শ্রেণির নাগরিক গড়ে তুলবেন। আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর হামলার নিন্দা ও সরকারের সমালোচনা: হামলার নিন্দা: আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর যেভাবে পেটানো হয়েছে, হাসনাত আব্দুল্লাহ সেটিকে ‘কোনো সভ্য রাষ্ট্রীয় চরিত্র হতে পারে না’ বলে মন্তব্য করেন। ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান: তিনি অনতিবিলম্বে এ ‘হীন কাজের’ জন্য সরকারকে ক্ষমা চাওয়ার এবং গ্রেফতারকৃত শিক্ষকদের ‘সূর্য ডোবার আগে ছেড়ে দেওয়ার’ আহ্বান জানান।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি হতাশা: তিনি প্রত্যাশা করেছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ‘পুরোনো পথে হাঁটবে না’ এবং শিক্ষাবান্ধব হবে। কিন্তু এই সরকারকে তিনি ‘প্রমোশনবান্ধব সরকার’ এবং ‘পোস্টিং দেওয়া’ প্রধান কাজ বলে উল্লেখ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘হাসিনার আমলে যারা রাস্তায় এসে তার পক্ষে স্লোগান দিয়েছিল অর্থের বিনিময়ে তাদের পদায়ন অব্যাহত রয়েছে।’ স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিয়ে মন্তব্য: তিনি স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সমালোচনা করে বলেন, তিনি অসুস্থ হলে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিতে যান, অথচ তার উচিত ছিল দেশের মানুষ যেখানে চিকিৎসা নেয় সেখানে চিকিৎসা নেওয়া। হাসনাত এই কাজকে ‘নির্লজ্জের’ মতো কাজ বলে মন্তব্য করেন।

Reporter Name 


















