
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কর্মবিরতি দ্বিতীয় দিনে, আজ ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি , ১৪ অক্টোবর ২০২৫ – মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে দেশজুড়ে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি দ্বিতীয় দিনে গড়িয়েছে। সরকার ঘোষিত বর্তমান বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতার হারকে ‘অপর্যাপ্ত ও অবাস্তব’ আখ্যা দিয়ে শিক্ষকরা তাদের লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আন্দোলনের অংশ হিসেবে, আজ মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সচিবালয় অভিমুখে ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা।
চূড়ান্ত ঘোষণার অপেক্ষা
সোমবার (১৩ অক্টোবর) বিকেলে ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’-এর সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে দাবি মেনে নিয়ে প্রজ্ঞাপন বা কোনো ঘোষণা না এলে লং মার্চসহ পরবর্তী আরও কঠোর কর্মসূচি অব্যাহত রাখা হবে। মঙ্গলবার সকালে অধ্যক্ষ আজিজী আরও নিশ্চিত করেন, “আমাদের কর্মবিরতি চলবেই। মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, ১৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা এবং কর্মচারীদের জন্য ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত কোনো শিক্ষক শ্রেণিকার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবেন না।” সারাদেশে স্থবির পাঠদান আন্দোলন এবং পুলিশের বলপ্রয়োগের প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকেই সারাদেশের সব বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানের স্কুল-কলেজগুলোতে ক্লাস কার্যক্রম সম্পূর্ণ স্থবির হয়ে পড়েছে। শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ না করে বিদ্যালয়ের আঙিনা, শিক্ষক লাউঞ্জ কিংবা অফিসকক্ষে বসেই অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেক স্থানে শিক্ষকরা হাতে ব্যানার-প্ল্যাকার্ড নিয়েও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষকরা ঢাকায় আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রতি সংহতি জানিয়ে পোস্ট দিচ্ছেন। পুলিশি বাধা ও লাগাতার অবস্থান শিক্ষকদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সেখানে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ শিক্ষকদের সরাতে গেলে ধস্তাধস্তি হয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং নেতাদের আহ্বানে শিক্ষকরা পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেন এবং সেখান থেকেই অনির্দিষ্টকালের লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়। রোববার ও সোমবার টানা দু’রাত ধরে শিক্ষকরা রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করেছেন। পলিথিন শিট বা ব্যানারকে বিছানা বানিয়ে তারা রাত কাটিয়েছেন। তাদের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা, দাবি মেনে নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি ও আন্দোলন চলবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অনড় অবস্থানে রয়েছেন।
(সূত্র: আন্দোলনকারী শিক্ষক সংগঠন এবং স্থানীয় সংবাদদাতা)

Reporter Name 



















