সোনার জন্য সব করতে পারে গোল্ডবাবুর মান্নান তোতা সিন্ডিকেট!
আন্তর্জাতিক স্বর্ণ চোরাকারবারিরা দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে নিরাপদ ট্রানজিট হিসেবে চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহের সীমান্তবর্তী ভারত ঘেঁষা দর্শনার এসব রুটে আধিপত্য ও ক্ষমতার জানান দিতে কতোটা ভয়ঙ্কর হতে পারে শুনলে চক্ষু চড়ক গাছ হবে।
অনুসন্ধান বলছে, সাবেক সাংসদ আলী আজগর টগর ও তার ভাই উপজেলা চেয়ারম্যান বাবু @ গোল্ড বাবুর ছত্রছায়ায় চোরাকারবারি, মাদক বানিজ্য, লাগেজ পারাপার ও অবাধ চাদাবাজির মাধ্যমে রাতারাতি ভাগ্য বদলেছে অনেকের। দীর্ঘ সে তালিকায় একে একে মোবারকপাড়ার আলী হোসেনের ছেলে মান্নান, ডজনেরও বেশি মামলার আসামী একই এলাকার তোতা, মান্নানের ভাই কালু, চট্টগ্রাম এয়ারপোর্টে ৬০ কেজি স্বর্ণ নিয়ে আটক হয়। নফর, সাইদুর রহমান বাংলা, তোতার সহচর সোহাগ গতবছর মোবারকপাড়ার নিজ বাসায় ৭৫ কেজি রুপা সহ আটক হয়, কাস্টমস এ সিএনএফ ব্যাবসায়ী রফিকুল ৮/ ১০ টি বাড়ির মালিক হয়েছেন, হুন্ডি আরিফ বিদেশে অর্থ পাচারের সবচেয়ে বড়ো মাধ্যম মানি চেন্জারের মাধ্যমে সবাই সক্রিয় অর্থ ও স্বর্ণ পাচারে। ২২ টি স্বর্ণের বিস্কিট বার নিয়ে তোতার সহচর ইস্রাফিল ৬ মাস আগে কাঁচাবাজার দর্শনার কাছে ডিবি পুলিশের হাতে আটক হয়। ৪ কেজি ৪১৬ গ্রামের সে স্বর্ণ ফেরত পেতে গোল্ড বাবুরা চেষ্টার কমতি রাখেনি। আট বছর আগে লোকনাথপুরে ১৪ কেজি স্বর্ণ ফেলে পালানোর চেষ্টাকালে পুলিশের হাতে আটক হয় মান্নান।
সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজিমের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই! ব্যাবসার নিয়ন্ত্রন নিতে একের পর এক হত্যাকান্ড ২০১৯ সালে পল্টু হত্যাকান্ড, ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা বিল্লাল, দর্শনা কলেজ ছাত্র রোকনসহ অনেক হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে এলাকায়। ২০২৩ সালে থানায় ২ ডজনেরও বেশি মামলা আছে, তারপরেও এ চক্রের দৌরাত্ম্যে রোখা যাচ্ছেনা। দুই সন্তানের জননী খুন হওয়া নইমুদ্দিন আহম্মেদ পল্টুর স্ত্রী ও গর্ভধারিণী মায়ের ভেজা চোখের পানি ও অব্যাহত হুমকি ও চাপের পরেও বুকে পাথর চেপেছেন বিচারের আশায়।
মহেশপুরের শ্রীনাথপুর। কদিন আগেও মন্ত্রী সাধন চন্দ্র অবৈধভাবে ভারতে পালানোর সময় আটক হয় এ রুটে। দর্শনার জয়নগর, নিমতলা, জীবননগরের গয়েশপুর,কার্পাসডাংগার মুন্সিপুর- কুতুবপুর, দামুরহুদার সুলতানপুর, মদনা ইউনিয়নের কামার পাড়া নাস্তিপুর, বড় বোয়ালদিয়া, ফুলবাড়িয়া চাকুলিয়ায় ভারত লাগোয়া অরক্ষিত সীমানায় বিজিবি, কাস্টমস ও গোয়েন্দা নজরদারির ভিতরেও মদনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকারিয়া আলমসহ গোল্ড বাবু ও মান্নান তোতার কমিশন ভাগ পেতেন।
চোরাই পথে কেনো আসছে স্বর্ণ? কোথায় যাচ্ছে স্বর্ণ? ায় সোনা আসে মাদক। ফেন্সিডিল, ইয়াবা, গাজা আসছে ভারত থেকে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বাড়ি ফ্ল্যাট ও সম্পদের বাইরেও ইন্ডিয়াতে রয়েছে পাচারকারীদের সম্পদ। এয়ারপোর্ট পাড়ি দিয়ে ঢাকার মোহাম্মদপুর, যাত্রাবাড়ি, ও তাতীবাজার এলাকায় তাদের ক্রয়কৃত নিজস্ব ফ্ল্যাটে স্টক করে সুবিধামতো সময়ে গাড়িতে ভিআইপি স্টিকার লাগিয়ে সবাইকে ম্যানেজ করেই বহুরুপে ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে চলছে এসব অবৈধ ব্যবসা।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায় ১ টি স্বর্ণের বিস্কিটের ওজন ৯ ভরি। শুল্ক ট্যাক্স ফাঁকিতে অবৈধপথে খরচ কম প্রায় অর্ধ লাখ টাকা। পরিবহনকারী দের বার প্রতি ৩/৪ হাজার দিলেই তাতীবাজার, উত্তরা কিংবা যাত্রাবাড়ীতে নিজস্ব থাকা নিরাপদ যায়গায় মাল চলে যায়। সাথে ১৫% ধাতব দিয়ে রিফাইন করে ওজন বাড়িয়ে ৩/৪ লাখ বাড়তি আয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছে এ চক্র। এতো এতো ঘটনার পরেও স্থানীয় প্রশাসন কিংবা বসবাসরত জনগন প্রকাশ্যে কথা বলতে ভয় পান সবাই। খোদ প্রশাসনের কর্তাদের কাছেও মিলছেনা তার উত্তর!
এলাকাবাসী ও সচেতন মহলের দাবী। ছাত্রজনতা ও গণমানুষের নতুন বিপ্লবের পরেও ভয়ংকর এ সিন্ডিকেট ও অত্যাচারের হাত থেকে মুক্তি মিলবে কি?
আপনার মতামত লিখুন :