পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ক্যাশিয়ার জসিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আজহারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বাড্ডা থানায় একটি মারামারির ঘটনায় জসিম উদ্দিন নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
জসিম চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান।
এরআগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন বেনজিরের আরেক ক্যামিয়ার মিজান। তিনি রংধনু গ্রুপের পরিচালক ও রূপগঞ্জ উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান। রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও মিজানুর রহমানের মাধ্যমে পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ অবৈধভাবে উপার্জন করা অর্থের বিশাল একটি অংশ বিনিয়োগ করেছেন, বিশেষ করে দুবাই, সিঙ্গাপুর, কক্সবাজার ও ঢাকায় বিভিন্ন হোটেল এবং স্বর্ণ ব্যবসায় এই অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে। রফিকুল-মিজানুরের মাধ্যমে বেনজীরের বিদেশে বিনিয়োগের অন্যতম দুবাইয়ে শতকোটি টাকার হোটেল ব্যবসা।রফিকুল ইসলামের সঙ্গে বেনজীরের মালিকানায় দুবাইয়ের হোটেলটির নাম রয়াল কনকর্ড হোটেল অ্যান্ড সুইট। বিলাসবহুল এই হোটেলের অবস্থান দুবাই শহরের কেন্দ্রস্থল মাকতুম স্ট্রিটে। দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, দুবাই ক্রিক, গলফ ও ইয়ুথ ক্লাব, সোনা ও মসলার বাজার এবং কেনাকাটা ও অবসর কেন্দ্রগুলোর খুব কাছে হোটেলটির অবস্থান। দুবাই গ্র্যান্ড মসজিদ থেকে এর দূরত্ব তিন কিলোমিটার।
রফিকুল-মিজানুরের মাধ্যমে দেশ থেকে টাকা পাচার করে গড়ে তোলা বেনজীরের এই হোটেলে আছে অ্যাপার্টমেন্ট, এক্সিকিউটিভ, সুইটসহ অত্যাধুনিক রুম। যেগুলোর ভাড়া ৩৫০ দিরহাম থেকে শুরু করে এক হাজার ৫০০ দিরহাম। টাকায় হোটেলটির রুমভাড়া ১০ হাজার থেকে শুরু করে ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত এই দুই ভাইয়ের মাধ্যমে বেনজীর সিঙ্গাপুরে গড়ে তুলেছেন সোনার ব্যবসা। তাঁর জুয়েলারি শপটির নাম নিজি জুয়েলার্স।এটির অবস্থান সিঙ্গাপুরের মুস্তফা মার্কেটের পাশে। দেশ থেকে পাচার করে প্রতিষ্ঠানটিতে বেনজীর প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন।
দুবাই-সিঙ্গাপুরের পাশাপাশি রফিকুল-মিজানুরের মাধ্যমে বেনজীরের অবৈধ টাকা কক্সবাজারের কলাতলিতে দুটি বিলাসবহুল হোটেলে বিনিয়োগ করা হয়েছে। হোটেল দুটি হলো—হোটেল বেস্ট ওয়েস্টার্ন প্রিমিয়ার ও হোটেল রামাদা লিমিটেড। একইভাবে বনানীর সি ব্লকের ১৫ নম্বর রোডের ৫৯ নম্বরে বেনজীরের অবৈধ টাকায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে হোটেল ইউনিক রিজেন্সি।
রফিকুল-মিজানুর আয়নাঘরের কারিগর চাকরি হারানো বিতর্কিত সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানকে শতকোটি টাকার বাগানবাড়ি উপহার দিয়েছেন। বেনজীর-জিয়াউলের মতো ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে দুই ভাই রূপগঞ্জ এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন।
আপনার মতামত লিখুন :