ষড়যন্ত্রের শিকার ঢাকা ওয়াসার প্রকৌশলী আল আমিনের আদৌও কী সম্পদের পাহাড় আছে?


প্রকাশের সময় : জুলাই ১৭, ২০২৪, ১০:৫৪ পূর্বাহ্ন / ১৬৮
ষড়যন্ত্রের শিকার ঢাকা ওয়াসার প্রকৌশলী আল আমিনের আদৌও কী সম্পদের পাহাড় আছে?

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা ওয়াসার প্রকৌশলী আল আমিনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে গত ৯ই জুন-২৪ তারিখে দুর্ণীতি দমন কমিশনে লিখিত অভিযোগ করেন বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের খালিয়া গ্রামের মৃত আজগর আলীর ছেলে আব্দুর রহমান। স্বার্থন্বেষী মহলটি প্রকৌশলীর বাড়ির সামনে বালিয়াকান্দি উপজেলার সদর ইউনিয়নাধীন ১ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ শালমারা মৌজার ৫১ নং খাস খতিয়ান ভুক্ত দাগের খাস জমি জোরপূর্ব ভাবে দখলের পাঁয়তারা করলে বাধা দেন আল আমিন ও এলাকাবাসী। ঝুঁকিপূর্ণ গাছ কাটায় আব্দুর রহমানের ষড়যন্ত্র মামলায় বিপাকে এলাকাবাসী ও এলাকার কতিপয় সাধারন জনগণকে মামলাদ্বারা হয়রানি নিয়ে সমকাল ও দৈনিক মাতৃকন্ঠ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে স্বার্থন্বেষী আব্দুর রহমান সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা ও মানষিক ভাবে আঘাতের লক্ষ্যে বালিয়াকান্দি থানাসহ দুর্ণীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ফরিদপুরে লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগে বলা হয় তার ঢাকা সাভারের একটি ৬ ছয় তলা বিল্ডিং, ঢাকা মোহাম্মদপুর বেঁড়িবাঁধে ১১ তলা বিল্ডিং, একটি ফ্ল্যাট, গাজীপুরে রিসোর্ট ও গ্রামের বাড়ী শালমারাতে ৭-৮ কোটি টাকা ব্যায়ে ৩তলা আধুনিক ডিজাইনের নির্মানাধীন ভবন, গরুর খামার, একাধিক অবৈধ স্থাপনা, বিভিন্ন ব্যাংক এ্যাকাউন্টে তার এবং তার পরিাবরের নামে অস্বাভাবিক ব্যাংক ব্যালেন্স রয়েছে। বাড়ীতে ছোট্র একটি ৩০ ফুটের টিনের ঘর এখনো রয়েছে। পাশের শরীকদের এক প্রকার জোড়পুর্বক সরিয়ে দিয়ে আলিশান বাড়ী তৈরী করছেন। গ্রামের বাড়ীতে বিদেশী কুকুর, কবুতর ও গরুর খামার গড়ে তুলেছেন। মাঠে শত বিঘা জমি ক্রয় করেছেন। সরকারী খাল দখল করে বাড়ীতে প্রবেশের রাস্তা নির্মাণ করেছেন। রাস্তা নির্মাণ করতে গিয়ে খালের পাশের কয়েকটি গাছ ফিল্মিস্টাইলে কেটেছে প্রকাশ্যে দিবালোকে। প্রকৌশলী আল আমিনের বিরুদ্ধে বালিয়াকান্দি থানায় একটি গাছ চুরি মামলা দায়ের হয়। তিনি তার ও পরিবারের নামে থাকা অবৈধ সম্পত্তি সম্পর্কে অনুসন্ধান করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান।

অভিযোগের সূত্র ধরে সরেজমিনে অনুসন্ধানে দেখা যায়, গ্রামের বাড়িতে আনুমানিক ৭০ লক্ষ টাকা ব্যায়ের মাধ্যমে নির্মাণাধীন ৩ তলা ভবন, মোহাম্মদপুর বসিলায় দয়াল হাউজিং এ ১.০২ শতাংশ জমি, শালমারা, উত্তর শালমারা, শালকি ও সোনাই কুড়ি মৌজায় ২০.৭ লক্ষ টাকায় ৩.২ বিঘা ক্রয়কৃত কৃষি জমি রয়েছে। আল আমিনের আয়কর নথিতে ঢাকার জমিসহ সকল সম্পদের বিবরণী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ৭৯৯৪৯৪৮৬৮৫৭৯ নং আয়কর নথিতে ২৮ শে জানুয়ারী-২৪ তারিখের তথ্য অনুসারে ৮৪ লক্ষ ৭৫ হাজার ৭৫ টাকার স্থাবর অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। উক্ত নথি অনুযায়ী তিনি বাৎসরিক ৬ লক্ষ ৬৬ হাজার ৪ শত টাকা বেতন, ইন্টারেস্ট অন সিকিউরিটি ১ লক্ষ ৬৫ হাজার ৬ শত টাকা এবং কৃষি আয় ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকাসহ সর্বোমোট ১১ লক্ষ ১২ হাজার টাকার আয়ের অনুকূলে ৬৬ হাজার ২ শত ৯১ টাকা আয়কর প্রদান করে যাচ্ছেন।
প্রকৌশলী আল আমিনের ঢাকা ওয়াসার প্রাতিষ্ঠানিক তথ্য অনুযায়ী ৬ই জুলাই-২১ তারিখে অনুষ্ঠিত ঢাকা ওয়াসার অগ্রিম ঋণ সংক্রান্ত সুপারিশে পৈতৃক জমিতে গৃহ নির্মাণ বাবদ ১ম কিস্তির ১০ লক্ষ টাকা ও স্মারক নং- ৪৬.১১৩.২০৮.০০.০১৩.০১৩.২০২০.৭৯৭ ২য় কিস্তিতে ৩০ লক্ষ টাকা লোন গ্রহণ করার তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়।
অন্যদিকে ২২ শে মার্চ-২২ তারিখে ব্রাক ব্যাংকের ধানমন্ডি শাখা হতে ১২ লক্ষ টাকা লোন ও ইস্টার্ন ব্যাংক থেকে ৬ লাক্ষ টাকা লোন গ্রহণসহ পিতা হতে প্রাপ্ত পেনশন ও বাবার জীবন দশায় রেখে যাওয়া অর্থ সম্পদ থেকে ২০ লক্ষ টাকা গ্রহণ করে নির্মানাধীন বাড়ির কাজ করে যাচ্ছেন।

জানাযায়, আল আমিন এর বাবা শেখ মোয়াজ্জম হোসেন তার বাবা স্টেশন অফিসার হিসেবে ফায়ার সাভিস ও সিভিল ডিফেন্সে সুনামের সাথে চাকরি করেন। পরে তিনি অবসর এ আসেন। তিনি পেনশন সহ জীবন দশায় ৩৫ লক্ষ টাকা রেখে যান আল আমিন এর মায়ের নামে। তা থেকে আল আমিন এর মা নারী উদ্দোক্তা হিসেবে তিনি ‌‌২০২০ সালে খামার শুরু করেন, যা সরকার কতৃক নিবন্ধিত। নিবন্ধন নং ডিআর/রাজ/বালি ৩৩(২০২০-২১)।
অভিযোগকারী ব্যক্তি শ্রেয় স্বার্থ হাসিলের জন্য ও অসৎ উদ্দেশ্যের জন্য এই অভিযোগ করেছেন ও এর বাইরে কোন সম্পদ নেই মর্মে প্রাথমিক ভাবে জানাযায়।

প্রকৌশলী আল আমিন জানান, আব্দুর রহমান গং দীর্ঘ সময় আমার বাড়ির সামনে সরকারী খাস জমি দখলের পায়তারা করছিল। অন্যদিকে রাস্তা করার জন্য এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট মহলে লিখিতভাবে জানানোর পর ছোট ৩ টি গাছ কর্তন করেন সে বিষয়েও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়। গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে সামাজিক ভাবে আমার সম্মানহানীর লক্ষ্যে দুদকে এ মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে আব্দুর রহমানকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।