লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুর -২ (রায়পুর-সদর আংশিক) আসনে উপ-নির্বাচনে জয়ী হয়ে ব্যাপক উন্নয়ন ও জনপ্রিয়তাকে সামনে রেখে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন। তিনি ২০২১ সালে শুন্য হওয়া লক্ষ্মীপুর -২ আসনের উপ-নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ আসনে ১৯৯৬ সালে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর আর কোন আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হননি। অবহেলিত এ আসনের এ অঞ্চল থেকে ওই অঞ্চলের মানুষের সমস্যা সমাধানে এডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপি ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করেন। এই কাজের ভূয়সী প্রশংসা জেলাজুড়ে। নিয়মিত সংসদীয় এলাকায় থাকার কারণে মানুষের সেবায় মনোনিবেশ ও প্রতিনিয়ত জনগণের জন্য উন্নয়ন কর্মকান্ডে ভোটারাও তার প্রতি সন্তুষ্ট। সংসদীয় এলাকার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে সরেজমিনে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
এদিকে এ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী এড. নয়ন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে তুলে ধরছেন বাস্তবায়ন করা সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র। একই সঙ্গে উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখতে তাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করার আহব্বান জানাচ্ছেন।
লক্ষ্মীপুর জেলার ৪টি আসনের মধ্যে উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপি। তিনি উপ-নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরে রাস্তা-ঘাট, স্কুল-কলেজ. মসজিদ, মাদ্রাসা, পর্যটন স্পটসহ কয়েক’শ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বরাদ্ধ দিয়েছেন। এজন্য মাত্র আড়াই বছরে জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে সুনামও ছড়িয়ে রয়েছে তার। আর এটিকে ভোটের মাঠে কাজে লাগাচ্ছেন তিনি।
তথ্যসূত্রে জানা যায়, এ আসনে এলজিইডির মাধ্যমে ৩০২ কোটি টাকার রাস্তা ঘাটসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেছেন তিনি। এছাড়াও টি আর কাবিখার মাধ্যমে মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, কবরস্থান, স্কুল-কলেজ ও রাস্তাঘাটসহ সামাজিক অবকাঠামোগত সংস্কারে ১৪ কোটি ৬০ লাখ টাকার উন্নয়ন করেছেন। বিনামূল্যেসহ মোট ৬৪৭টি ডিপ টিউব ওয়েল বিতরণ করেছেন তিনি। এছাড়াও তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় লক্ষ্মীপুর প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় অনুমোদন, নার্সিং ইনস্টিটিউট অনুমোদন, মিনি স্টেডিয়াম-মডেল মসজিদের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন, নৌ বন্দর উন্নতিকরণসহ ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।
জানা যায়, লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর ও সদর আংশিক) আসনে ১৩ জন প্রার্থী চুড়ান্ত ভোটের লড়াইয়ে মাঠে থাকলেও এর মধ্যে ৯ প্রার্থী ভোটারদের কাছে অচেনা। ফলে তাদের নিয়ে কোনো আগ্রহ নেই ভোটারদের মাঝে। লড়াইটা হবে মূলত নৌকা, লাঙ্গল ও ঈগল প্রতিকের মধ্যে। তবে, ঈগল প্রতিকের প্রার্থী ও সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলামের স্বামী সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলকে ঘিরে রয়েছে নানান বিতর্ক। মানবপাচারের অভিযোগে কুয়েতে দন্ডপ্রাপ্ত হন তিনি। এরপর থেকে সেলিনা ইসলামকে রায়পুরে দেখা যায়নি বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
সরেজমিনে ঘুরে ও ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর-২ আসনের অলিগলিতে টানানো হয়েছে নৌকার পোস্টার। কিছু কিছু জায়গায় টানানোর কাজ চলছে। তবে, নৌকার পোস্টারের পাশাপাশি অল্পকিছু জায়গায় লাঙ্গল প্রতিকের প্রার্থী বোরহান উদ্দিনের পোস্টার দেখা গেছে। এ ছাড়া, অন্য কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থীর পোস্টার বা প্রচারণা এখনো চোখে পড়েনি। যদিও মঙ্গলবার বিকেলে লক্ষ্মীপুরপ্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিজের অবস্থান জানান দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সেলিনা ইসলাম।
টুমচর ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচারণা করছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন উপলক্ষ্যে ভোটারদের ঘরে ঘরে যাচ্ছি, লিফলেট বিতরণ করছি। সরকারের উন্নয়ন চিত্রগুলো তুলে ধরছি। ভোটারদেরও যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছি। আশা করছি, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সফলভাবে আমরা (নৌকার প্রার্থী) জয়লাভ করতে পারব।
নির্বাচন প্রসঙ্গে কথা হয় রায়পুরের বাসিন্দাদের সাথে। তাদের বেশির ভাগই বলছেন, ল²ীপুর-২ আসনে একপাক্ষিক নির্বাচন হবে। কারণ, নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন ছাড়া শক্তিশালী কোনো প্রতিদ্ব›দ্বী নেই।
চরবংশী ইউনিয়নের বাসিন্দা রুহুল আমিন বলেন, নির্বাচন উপলক্ষ্যে প্রার্থীরা প্রচারণা শুরু করেছেন। তবে, আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছাড়া তেমন কারও প্রচারণা দেখা যাচ্ছে না। আওয়ামী লীগের কর্মীরা জনে জনে প্রচারণা চালালেও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের দেখা মিলছে না।
শাকচর ইউনিয়নের বাসিন্দা মোবারক হোসেন (ছদ্মনাম) বলেন, এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন ছাড়া আর কোনো হেভিওয়েট প্রার্থী নেই। ফলে, নির্বাচনে তিনিই জয়ী হবেন, এমনটি ধরে নেওয়া যায়।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী বলেন, উপ-নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হওার পর থেকে জনগণের সকল প্রত্যাশা পূরণ করেছেন এমপি নয়ন। বিনামূল্যে টিউবওয়েল স্থাপন, টিআর, কাবিখা, কাবিটা সঠিক বন্টন সহ কয়েক’শ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। এজন্য নর্বাচনের মাঠে সরকারের মেগা প্রকল্পগুলো ভোটারদের কাছে তুলে ধরছি। উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে ভোটারদের অনুরোধ করছি।’ তার উন্নয়নের জন্য এবং জনপ্রিয়তার কারণে জনগণ উৎসবমূখর পরিবেশে ভোট দিবে বলেও জানান তিনি।
লক্ষ্মীপুর-২ আসনে মোট ভোটার চার লাখ ৫১ হাজার ৪২৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার দুই লাখ ৩১ হাজার ৮৯০ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ১৯ হাজার ৫৩৭ জন। তবে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনের ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলার ৪পি আসনে সবচেয়ে বেশি প্রার্থী রয়েছে লক্ষ্মীপুর-২ আসনে।
আপনার মতামত লিখুন :