মিরপুর বিআরটিএ অফিসে দুর্নীতির অভিযোগ: সিন্ডিকেটের প্রভাবে সাধারণ জনগণ ভোগান্তির শিকার।


প্রকাশের সময় : অক্টোবর ৭, ২০২৪, ৮:৪৭ অপরাহ্ন / ২৭৪
মিরপুর বিআরটিএ অফিসে দুর্নীতির অভিযোগ: সিন্ডিকেটের প্রভাবে সাধারণ জনগণ ভোগান্তির শিকার।

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) মিরপুরের কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ সূত্রের বরাতে জানা গেছে, বিআরটিএ-র কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গঠন করে ঘুষ, তদবির বাণিজ্য এবং অন্যান্য অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে নিয়মিত হয়রানি করছেন।

সূত্র মতে, মিরপুর বিআরটিএ সহকারী পরিচালক শামছুল কবীর এবং সাবেক আনসার সদস্য মোঃ নাজমুল সরদারসহ একাধিক কর্মকর্তা নিজেদের প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে সাধারণ জনগণের নিকট থেকে অর্থ আদায় করছেন। নাজমুল সরদারকে এই সিন্ডিকেটের প্রধান কর্মনির্বাহী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যিনি বিআরটিএ অফিসের বিভিন্ন কার্যক্রমে প্রভাব খাটিয়ে নিজের ও অন্যদের লাভবান হওয়ার সুযোগ তৈরি করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শামছুল কবীর সহকারী পরিচালক, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। তিনি নিজেকে প্রধান উপদেষ্টার লোক পরিচয় দিয়ে থাকেন। তিনি বিআরটিএর কোন কর্মকর্তাকে পাত্তা দিতে চান না। তিনি বড় ক্ষমতাধর ও কালো টাকার মালিক। তার ভাগিনা তাজুল ইসলাম এর আপন শালক রুহুল আমিন এর মাধ্যমে বিআরটিএর সমস্ত প্রকার অফিসিয়াল কাজকর্ম করান। রুহুল আমিন বর্তমানে ১১৭ নং রুমে বেবি রানির সঙ্গে কাজ করেন গোপনে। তাজুল ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ক্যাশিয়ার সাবেক আনসার সদস্য মোঃ নাজমুল সরদার তার কাছে তাজুল ইসলামের সমস্ত ঘুষের টাকা জমা থাকে এবং নাজমুলের মাধ্যমে সমস্ত বড় বড় তদবির বাণিজ্য করে থাকেন। নাজমুল বর্তমানে মিরপুর বিআরটিএ-র বড় তদবিরবাজ ও কুকর্মের সহযোগী কারী।

নাজমুলকে বিআরটিএ’র সমস্ত কর্মকর্তা কর্মচারী এক নামে চিনেন এবং তার মাধ্যমে সমস্ত টাকা লেনদেন ও অপকর্ম করে থাকেন। নাজমুল সবসময় ধরাছোয়ার বাহিরে থাকেন। নাজমুলের মাধ্যমে বিআরটিএর অপকর্মকরা অতি সহজ বলে সকলে মনে করেন। নামজুলের মাধ্যমে বিআরটিএর সমস্ত শোরুম এর অবৈধ কর্মকান্ড করে থাকেন লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে।

নাজমুলের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন, নুরআলম জিকু তিনি রুম নং ১১৮ তে বিআরটিএর উচ্চমান সহকারী মনিরের সহযোগী হিসাবে সমস্ত অপর্কম করে থাকেন। বিআরটিএর জিকু প্রতি নিয়ত ১০০ থেকে ২০০ অবৈধ ফাইল এর কাজ করে থাকেন। উক্ত ফাইলের সমস্ত টাকা বিআরটিএর পরিচালক, উপ-পরিচালক, সহকারী পরিচালক সহ সকল কর্মকর্তারা ভাগ বাটোয়ারা করে দেন। বর্তমানে মিরপুর বিআরটিএর মূল কর্ণধর নূর আলম জিকু যিনি কুষ্টিয়ার চরম পন্থি বাহিনীর অন্যতম সদস্য হিসাবে ঢাকায় সমস্ত প্রকার অপকর্ম করে থাকেন।

অভিযোগ রয়েছে, তিনি ও নাজমুল বিআরটিএতে অগ্নি সংযোগ এর মাষ্টার মাইন্ড হিসাবে কাজ করেছেন। সাবেক আনসার নাজমুলের বাড়ি গোপালগঞ্জে কোটালী পাড়া বাড়ী হওয়ায়, সাবেক এমপি নিক্সসন চৌধুরী ও শেখ সেলিম এর ক্ষমতা ব্যবহার করে বিআরটিএ প্রতিনিয়ত লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিআরটিএ-র কয়েকটি অফিসের কাজ নিয়ন্ত্রণ এবং অবৈধ অর্থ আদায়ের প্রক্রিয়া নিয়মিত করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, সিন্ডিকেটের সদস্যরা তাদের নিজস্ব প্রভাব ব্যবহার করে বিআরটিএ-র স্বাভাবিক সেবা কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করছেন, যেখানে সাধারণ জনগণকে বিভিন্ন সময় ঘুষ দেওয়ার চাপ দেওয়া হয়।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে যে, এই সিন্ডিকেটের ক্ষমতার উৎস হিসেবে কিছু উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা আছেন যারা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে নিজেদের সংযোগের কথা প্রচার করেন। এই প্রভাবের কারণে তারা অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে সক্ষম হন।

এ পরিস্থিতিতে বিভিন্ন মহল থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এই অভিযোগগুলির সুষ্ঠু তদন্ত করে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হচ্ছে। জনগণের আশা, কর্তৃপক্ষ দ্রুত এই দুর্নীতির অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখবেন এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষায় এবং সেবা কার্যক্রমকে স্বচ্ছ রাখার জন্য, বিআরটিএ-র মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে সব ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি বলে সংশ্লিষ্ট মহল থেকে মনে করা হচ্ছে।

মিরপুর বিআরটিএ সহকারী পরিচালক শামছুল কবীর এই অভিযোগগুলোর বিষয়ে মন্তব্য করার জন্য যোগাযোগ করা হলেও তার কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।