রাজধানীর মিরপুরে ওয়াক-আপ কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দকৃত স্টাফ কোয়ার্টারে ফ্ল্যাট দখল করে নিয়ে চলছে রমরমা ভাড়াবাণিজ্য। মূল্যবান সরকারি জমি-ফ্ল্যাট দখলে নিয়ে নতুন করে বাহিরাগতদের কাছে ভাড়া দিয়ে আসছেন একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট ও রাজনৈতিক নেতারা। সুদ ব্যবসা, জুয়া, মাদক সেবন ও দেহব্যবসাসহ নানাবিধ অসামাজিক কার্যকলাপ চলছে এই কোয়ার্টারে। দখলদাররা প্রভাবশালী হওয়ায় বিষয়টি দেখেও দেখছেন না মিরপুর গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তারা। এতে ওয়াক-আপ কর্মচারীদের নিরাপত্তা আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মিরপুর ওয়াক-আপ স্টাফ কোয়ার্টারে মোট ভবন সংখ্যা ৩২ টি, পাঁচ তলা বিশিষ্ট ১৪ টি, ছয়তলা বিশিষ্ট ১৮টি, টিনশেড সহ ফ্ল্যাট সংখ্যা মোট ৩৬২টি। গত কয়েক বছরে দখল হয়ে গেছে প্রায় ৭০-৮০ টি ফ্ল্যাট। প্রভাবশালী সিন্ডিকেট প্রতিটি ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়ে থাকেন ১৩-১৪ হাজার টাকা করে। শুধু ফ্ল্যাট দখল করে ৯ লক্ষ ১০ হাজার টাকা আয় করেন তারা। কোয়ার্টারে ভিতরে খালি জায়গায় বানিয়েছেন গাড়ির গ্যারেজ, এখান থেকে আয় ২ লক্ষ টাকার উপরে।
এক শ্রেণির কর্মচারীরা কোয়ার্টার বরাদ্দ নিয়ে নিজেরা না থেকে ভাড়া দিয়ে আয় করছেন বাড়তি টাকা। অনেকেই আবার অবৈধ ভাবে একাধিক ফ্ল্যাট দখল করে সেসব ভাড়া দিচ্ছেন বাহিরাগতদের কাছে। ওয়াক-আপ স্টাফ কোয়ার্টারকে ঘিরে রমরমা এ ব্যবসা চললেও তদারকি নেই মিরপুর গণপূর্ত বিভাগের কর্তৃপক্ষের।
অভিযোগ রয়েছে, কখনো নিজের নামে স্টাফ কোয়ার্টার বরাদ্ধ নিয়ে,আবার বাড়তি আয়ের আশায় খালি থাকা ভবনের ফ্ল্যাট দখল করে বাহিরাগতদের কাছে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগ উঠেছে ওয়াক-আপ সরকারি বাসভবনবাসী কল্যাণ সমিতির সভাপতিসহ একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
ফ্ল্যাট দখল করে বাহিরাগতদের কাছে ভাড়া দেওয়ার বিষয়ে মুঠোফোনে কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি অসুস্থ আমি এখন কথা বলতে পারছি না, আমি আপনাকে পরে ফোন দিবো, বলেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। কল্যাণ সমিতির, সাধারণ সম্পাদক মোঃ জসিম উদ্দিনের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
প্রভাবশালী সিন্ডিকেট ও রাজনৈতিক নেতারা ওয়াক-আপ স্টাফ কোয়ার্টারে ফ্ল্যাট দখল করে বাহিরাগতদের ভাড়া দেওয়ার প্রসঙ্গে মিরপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদ আহসানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি এখানে আসার পরে দেখলাম ৭০-৮০টা ফ্ল্যাট বেদখল, আমি বিভিন্ন সময় থানা পুলিশ নিয়ে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছি। একাধিক ফ্ল্যাট খালি করে তালা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কিছুদিন পরে আবার বেদখল হয়ে যায়। দখলদাররা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে অবৈধ ফ্ল্যাট দখলদারের বিষয়ে একাধিকবার বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :