দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তপশিল একতরফা জানিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে ২২ পেশাজীবী সংগঠন। একতরফা তপশিল দেশকে সংঘাতে ফেলবে বলে মনে করছেন তারা। বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) ২২ পেশাজীবী সংগঠনের দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে এসব বিষয় তুলে ধরা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের দাবি উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগের ইচ্ছানুযায়ী একতরফা তপশিল ঘোষণা করে দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের পর দুটি নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। নগ্ন দলীয়করণের নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে জনমনে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
পেশাজীবী সংগঠনের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়- যারা নির্বাচন পরিচালনা করবেন, তাদেরও দলীয়করণ হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের পরের দুটি নির্বাচনে প্রহসন হয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচন ছিল ভোটারবিহীন নির্বাচন। এ প্রহসনের নির্বাচনে ১৫৩ জন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন! ২০১৮ সালে বিরোধীদল ও জোট নির্বাচনে যাওয়ার পরেও ভোটার ও প্রার্থীদের জন্য অনুকূল পরিবেশ অনুপস্থিত ছিল।
পেশাজীবী নেতারা বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীন নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির কারণে আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এই নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি জোরাল হয়ে উঠেছে। যদিও ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গঠিত সংবিধান সংস্কার কমিটির আলোচনাতেও আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলই তত্ত্বাবধায়ক সরকার অব্যাহত রাখার পক্ষে মতামত দিয়েছিল।
বাংলাদেশের বর্তমান সরকারব্যবস্থায় সব ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে ন্যস্ত জানিয়ে পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী পদে থেকে গেলে তার সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত পুলিশ বা প্রশাসন কর্মকর্তারা নিরপেক্ষভাবে কাজ করবেন, এটা বিশ্বাস করা দুষ্কর।
২০১৮ সালের নির্বাচনের (এবং এর পরের বিভিন্ন নির্বাচনে) পর দলীয় সরকারের অধীন সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব, এটি কোনো মানুষের বিশ্বাস করার কারণ নেই। এই সরকারের আমলে বর্তমান নির্বাচন কমিশন একাই সুষ্ঠু নির্বাচন করে ফেলতে পারবে, এমন কোনো বিশ্বাসযোগ্য আলামতও আমরা দেখতে পাইনি। বিভিন্ন জাতীয় নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ লক্ষণীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে। বর্তমান উদ্ভুত পরিস্থিতিতে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই।
বিবৃতি দেওয়া পেশাজীবী সংগঠনের নেতাদের মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, কাদের গণি চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ, ডা. মো. আব্দুস সালাম, ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) সভাপতি ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, ড. মোর্শেদ হাসান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান, ড. ছিদ্দিকুর রহমান খান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) এম আব্দুল্লাহ, নুরুল আমিন রোকন, এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের (এ্যাব) ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম রিজু, আলমগীর হাছিন আহমেদ, এগ্রিকালচারিস্ট এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এ্যাব) কৃষিবিদ রাশিদুল হাসান হারুন, ড. মোস্তাফিজুর রহমান, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়া, মো. জাকির হোসেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) মো. শহিদুল ইসলাম, খুরশিদ আলম, জিয়া পরিষদের ডা. মো. আব্দুল কুদ্দুস, ড. মো. এমতাজ হোসেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের ড. শামসুল আলম সেলিম, ড. কামরুল আহসান, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, ডা. শফিকুল হায়দার পারভেজ, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল, মো. রফিকুল ইসলাম, এমবিএ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ম্যাব) সৈয়দ আলমগীর, শাকিল ওয়াহেদ, জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (জেটেব) ইঞ্জিনিয়ার ফখরুল আলম, ইঞ্জিনিয়ার এবিএম রুহুল আমিন আকন্দ, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিইএব) সাইফুজ্জামান সান্টু ও সাখাওয়াত হোসেন, নার্সেস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ন্যাব) জাহানারা বেগম, সুজন মিয়া, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এমট্যাব) এ কে এম মুসা (লিটন), মো. বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব, ইউনানী আয়ুর্বেদিক গ্র্যাজুয়েট ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আগড্যাব) ডা. মির্জা লুৎফর রহমান লিটন, ডা. আমিনুল বারী কানন, ডিপ্লোমা এগ্রিকালচারিস্ট এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডি-এ্যাব) মো. জিয়াউল হায়দার পলাশ, সৈয়দ জাহিদ হোসেন, ফিজিওথেরাপিস্ট এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (প্যাব) মো. কামরুজ্জামান কল্লোল ও মো. তানভীরুল আলম।
আপনার মতামত লিখুন :