ঢাকা কাস্টম হাউসে সিন্ডিকেটের অবাধ রাজত্ব, কোটি টাকার দুর্নীতি


প্রকাশের সময় : নভেম্বর ১১, ২০২৪, ৮:১৬ অপরাহ্ন / ৭০
ঢাকা কাস্টম হাউসে সিন্ডিকেটের অবাধ রাজত্ব, কোটি টাকার দুর্নীতি

ঢাকা কাস্টম হাউসের কিছু প্রভাবশালী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চোরাই পণ্যের খালাস এবং ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। অভ্যন্তরীণ এক সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে তারা এ ধরনের অসৎ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন বলে জানা গেছে। এ সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সহকারী ডেপুটি কমিশনার সমরজিৎ দাস এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী কর্মকর্তারা। তারা বিভিন্ন স্তরের কর্মচারী ও দালাল চক্রের মাধ্যমে যাত্রীদের হয়রানি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাষ্ট্রীয় কোষাগার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তাদের এই অপতৎপরতায়।

বিভিন্ন প্রক্রিয়ার আড়ালে দুর্নীতি:
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা কাস্টম হাউসে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে যারা চোরাই পণ্যের খালাসে অনৈতিক সুবিধা আদায় করছে। তাদের আয়ে সহায়তা করে কিছু সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, যারা সিন্ডিকেটের নির্দেশে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া সহজ করতে অবৈধ সুবিধা গ্রহণ করেন। ফলে সিন্ডিকেট সদস্যরা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এবং কাস্টমসের নিয়মিত রাজস্ব আয় কমছে

বিচার শাখায় যাত্রী হয়রানি এবং ঘুষ বানিজ্য:
অভিযোগ রয়েছে যে, কাস্টমসের বিচার শাখায় যাত্রীদের হয়রানির পরিসীমা বাড়ছে। সহকারী ডেপুটি কমিশনার সমরজিৎ দাস বিচার শাখায় থাকাকালীন এই শাখায় প্রতিদিন অসংখ্য প্রবাসী যাত্রী হয়রানির শিকার হয়েছেন। বিমানবন্দরে কাস্টমস জব্দকৃত মালামাল এবং অন্যান্য নথি বিচারের জন্য বিচার শাখায় গেলে সেখানে যাত্রীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। সমরজিৎবর্তমানে বিমানবন্দর ইউনিটে কর্মরত আছে।

প্রতিদিন ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শুল্কযুক্ত বিভিন্ন মালপত্র আটক করা হয়। কাস্টমস গোডাউনে আটক এই মালামাল খালাসের জন্য যাত্রীদের পুনরায় কাস্টমস অফিসে আসতে হয়। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, বিচার শাখায় ফাইল প্রক্রিয়াজাতকরণের সময় ঘুষ ছাড়া ফাইল এগোয় না। সংশ্লিষ্ট দালাল চক্র কাস্টমসের সাথে যোগসাজশে ঘুষের বিনিময়ে যাত্রীদের ফাইল ছাড়ানোর ব্যবস্থা করেন।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এই শাখায় যাত্রীরা ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেন। তাদের বেশিরভাগই বিচার শাখার মূল কক্ষে প্রবেশের অনুমতি পান না। কারণ হিসেবে শাখার সিপাহীদের নির্দেশনা দেয়া আছে যাত্রীদের অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করতে না দেয়ার জন্য। অভিযোগ উঠেছে, যারা আগে থেকে সিন্ডিকেটের কাছে টাকা জমা দেন তাদেরই দ্রুত সেবা দেয়া হয়।

টাকার খাম এবং সিন্ডিকেটের গোপন কৌশল:
কাস্টম হাউসের বিচার শাখায় কর্মরত একটি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে দ্রুত সেবা প্রদান করার অভিযোগ রয়েছে। জানা যায়, প্রতিদিন অসংখ্য টাকার খাম সিন্ডিকেটের হাতে আসে যেখানে ফাইলের নম্বর উল্লেখ করে দেয়া হয়। প্রমাণ হিসেবে কেউ কেউ বলছেন, সিন্ডিকেটের চক্র টাকার খামের উপর ফাইলের নম্বর লিখে কাস্টম শাখায় জমা দেয় এবং বিনিময়ে দ্রুত পণ্য খালাস করা হয়।

সূত্রমতে, এই সিন্ডিকেট সদস্যরা টাকার বিনিময়ে ফাইল ছাড়াতে সিপাহীদের মাধ্যমে একটি গোপন কৌশল অবলম্বন করে। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট খাম অনুযায়ী ফাইল পরিচালিত হয় এবং যাত্রীরা কোন প্রকার প্রমাণ ছাড়া হয়রানির শিকার হন।

দুর্নীতির আস্তানা গড়ে তোলার অভিযোগ:
কাস্টম হাউসে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই সমরজিৎ দাসের বিরুদ্ধে নানান ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। বিচার শাখায় তার অনৈতিক কার্যক্রমের কারণে যাত্রীরা ন্যায্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং সেই সাথে সরকারের রাজস্ব আয়ও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সমরজিৎ দাসের এই অবৈধ সিন্ডিকেটের কারণে শুল্ক ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা বাড়ছে এবং সাধারণ যাত্রীরাও এসব সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন।

কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা:
কাস্টমসের এই ব্যাপক অনিয়ম এবং অনৈতিক কার্যকলাপ সম্পর্কে জানতে কাস্টম হাউসের কমিশনার এর বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

ঢাকা কাস্টম হাউসের এই অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় অনুসন্ধান করা হলে সংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেটের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উন্মোচিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কাস্টম হাউসের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এবং সিন্ডিকেটের ভূমিকা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল থেকে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি উঠছে।

নামাজের সময় সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:১০ পূর্বাহ্ণ
  • ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ
  • ৩:৩৫ অপরাহ্ণ
  • ৫:১৪ অপরাহ্ণ
  • ৬:৩৩ অপরাহ্ণ
  • ৬:২৭ পূর্বাহ্ণ