ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা দায়ের হয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ঢাকার একটি আদালতে এ মামলা করা হয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর পতিত হয়। ১৫ আগস্ট থেকে তার বিরুদ্ধে অন্তত ২১০টি মামলা দায়ের হয়েছে, যার মধ্যে ১৮১টি মামলায় হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
সম্প্রতি দায়ের হওয়া মামলায় অভিযোগ করা হয়, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়, ৪ আগস্ট রাজধানীর উত্তরা ফখরুদ্দিন বিরিয়ানি হাউজের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর বেপরোয়া গুলি চালানো হয়। মামলায় শেখ হাসিনাকে ১নং আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তার সঙ্গে আরও রয়েছেন ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান খান কামাল, শাহীন চাকলাদার, হাবিব হাসান, মোঃ খসরু চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল মালেক, মফিদুর রহমান সহ আওয়ামী লীগের অনেক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তির নাম।
বাদী জানিয়েছেন, তার ছেলে এনামুল হক মিহন (১৬) কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মকভাবে আহত হয়। তার ঘাড়ে গুলি লাগার পর, তাকে হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব না হওয়ায় বাড়িতে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তোলা হয়। বাদী আরও অভিযোগ করেন যে, শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা লাঠিচার্জ ও এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ চালায় এবং আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে তাদের জীবন বিপন্ন করে তোলে।
এই মামলাটি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ২১০টি মামলার একটি, যা তাকে ও তার সরকারের বিরুদ্ধে তোলা হত্যা ও সহিংসতার অভিযোগের দীর্ঘ তালিকায় যুক্ত হলো। বাদীর অভিযোগ অনুযায়ী, আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ নেতারা অন্যায়ভাবে সহিংসতার নির্দেশ দিয়েছিলেন, যা একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের বিপক্ষে ছিল।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের মামলা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি করতে পারে। ক্ষমতা পরিবর্তনের পর এসব মামলা নতুন সরকারের বিচারব্যবস্থা এবং রাজনৈতিক অগ্রাধিকারের প্রতিফলন হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :