লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা ছাত্রলীগের পদ বানিজ্য অতিষ্ঠ ইউনিয়নের তৃণমূলের নেতা কর্মীরা। টাকার বিনিময়ে ইউনিয়নগুলোতে কমিটি দেয়া হয়েছে বিবাহিত, অছাত্র এবং চাঁদাবাজের সাথে জড়িত এমন ব্যক্তিদের। এদের মধ্যে ধর্ষণ মামলার আসামী এবং হত্যা মামলার আসামীও কমিটিতে রয়েছে। বাক প্রতিবন্ধী কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগে কারাভোগ করেন উপজেলা ছাত্রলীগ সহ সভাপতি মাহবুব আলম শিপুল।
গত বছরের মে মাসে স্থানীয় তোফায়েল হত্যা মামলায় কারাভোগ করেন উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ। সভাপতি সম্পাদকের বিরুদ্ধে এমন অসংখ্য অভিযোগ থাকায় গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারী স্থগিত করা হয় উপজেলা কমিটি।
অভিযোগ রয়েছে কমিটির সভাপতি নুর উদ্দিন চৌধুরী রুবেল বিবাহিত। সে ২০২১ সালের আগষ্ট মাসে উপজেলার চর পাগলা গ্রামের ফিরোজ আলমের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার সাথীকে কোর্ট এফিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ে করেন। কমিটির সহ সভাপতি সোহেল উদ্দিন বিবাহিত, আরেক সহ সভাপতি মো. সোহেল একজন প্রবাসী। দীর্ঘ দিন দুবাই ছিলেন। কমিটির উপ শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক মো. ইয়াসিন চৌধুরী বাজার উচ্চবিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী। যারা টাকার বিনিময়ে উপজেলা কমিটির বিভিন্ন পদের মালিক বনে গেছে। ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত নাই এমন অছাত্রও রয়েছে ছাত্রলীগের কমিটিতে। উপজেলা ছাত্রলীগের এমন কার্যক্রমে ক্ষুব্দ পদ বঞ্চিতরা। এছাড়া পাটোয়ারী হাট ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সবুজ হোসেন বিবাহিত এবং একটি কন্যা সন্তানের জনক। একই ইউনিয়নের দক্ষিণ ফলকন গ্রামের সাহাব উদ্দিনের মেয়ে লাইজু আক্তারের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।
চরকাদিরা ইউনিয়নর ১ম যুগ্ম আহবায়ক মো. জাহেদ মাহমুদ রাশেদও বিবহিত। ইউনিয়ন কমিটিতে লাখ টাকা নিয়ে পদ দেন উপজেলা সভাপতি সম্পাদক। অথচ পদ বঞ্চিত তৃনমূলের নেতাকর্মীরা। টাকার বিনিময়ে দেয়া পদে রয়েছে নদীতে মাছ শিকার করা জেলে ও ভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনে নেতা। উপজেলার চর ফলকন, পাটোয়ারী হাট, চর কাদিরা সহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে এমনটি হয়েছে।
পাটোয়ারী হাট ইউনিয়নের সভাপতি প্রার্থী শাহিন মাহমুদ বলেন, ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি প্রার্থী ছিলাম, আমি উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদকে এক লক্ষ টাকা দিয়েছি । আমাকে সভাপতি না বানিয়য়ে যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক দিয়েছে। মোটা অংকের টাকার বিনিময় সভাপতি বানিয়েছে অন্যজনকে।
অভিযোগের বিষয়ে কমলনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নুর উদ্দিন চৌধুরী রুবেল বলেন, আমার বিবাহের বিষয়টি মিথ্যা। এছাড়া অন্য অভিযোগ গুলোও সত্য নয়।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ অভিযোগ গুলো অস্বীকার করে বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে এগুলো অপপ্রচার। টাকা নিয়ে কমিটির দেওয়ার বিষযটি সঠিক নয়। এছাড়া যদি ইউনিয়ন কমিটিতে কেউ বিবাহিত বা অছাত্র হয়ে থাকে তাহলে প্রমান পেলে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবো।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া বলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের বিবাহিতের বিষয়টি আমরা নিশ্চিত না। তবে সহ-সভাপতি শিপুলের বিষয়টির জানার পর তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সাধারণ সম্পাদকের বিষয়টি রাজনৈতিক মামলা। অচিরেই তা নিষ্পত্তি হয়ে যাবে। এছাড়া অন্য অভিযোগ গুলোর বিষয়ে আমাদের কাছে কোন অভিযোগ নেই। অভিযোগ পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :