আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পরিদর্শন করেছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
আজ সকালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই উপদেষ্টা ট্রাইব্যুনাল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম তাদেরকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ভবন ও ভবন সংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখান।
চিফ প্রসিকিউটর সাংবাদিকদের বলেন, তারা এসেছিলেন মূলত ট্রাইব্যুনালের পুরোনো ভবন যেখানে বিচার কার্যক্রম হবে সেটার যে সংস্কার কাজ চলছে তা দেখতে। এসময় গণপূর্তের প্রকৌশলীরাও তাদের সঙ্গে ছিলেন। উপদেষ্টারা তাদের কাছ থেকে কাজের অগ্রগতি জেনেছেন। উপদেষ্টারা যতদ্রুত সম্ভব সংস্কার কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হত্যা, গণহত্যাসহ সব মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন ও তদন্তকারী সংস্থা পুনর্গঠন করা হয়েছে। শিগগিরই ট্রাইবুনাল পুনর্গঠন করা হবে।
মুক্তিযুদ্ধকালীন সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য ২০১০ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার পর গত ১৪ বছরে ট্রাইব্যুনাল ৫৫টি মামলার রায় দিয়েছেন। ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর সব আইনি প্রক্রিয়া শেষে জামায়াতের ৫ শীর্ষ নেতা ও বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির এক সদস্যর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। স্কাইপি কেলেঙ্কারি, সাক্ষী গুম ও ন্যায়বিচার বঞ্চিত হওয়ার নানা অভিযোগ সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
নবগঠিত প্রসিকিউশনের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিক মান ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আমরা বদ্ধ পরিকর।
১৯৭৩ সালে প্রণীত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের অধীনেই জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ১৯৭৩ সালে প্রণীত আইনের ৩ (১) ধারায় বলা আছে, আইনের ২নং উপ-ধারায় উল্লেখিত যেকোনো অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা সংস্থা বা কোনো সশস্ত্র, প্রতিরক্ষা বা সহায়ক বাহিনীর কোনো সদস্যের জাতীয়তা যাই হোক না কেন, তা যদি এই আইন প্রবর্তনের আগে বা পরে বাংলাদেশ ভূখ-ে সংঘটিত হয়, তবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তার বিচার এবং শাস্তি দেয়ার ক্ষমতা থাকবে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে সংঘটিত অভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে গত ৫ আগস্ট দেশ থেকে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ গ্রহণ করে।
আপনার মতামত লিখুন :